কথায় আছে, জন্ম মৃত্যু বিয়ে এই তিন বিধাতার নিয়ে। মো: আল-আমীন(২৪)। বাবা আব্দুল হামেদ একজন ভাঙ্গারি ব্যবসায়ি। সংসারে তার চার ছেলে আর দুই মেয়ে। আল-আমীন তার সেজ ছেলে। আল-আমীনের আগের ও পরের দুই ভাই বিবাহ করে সংসারি হলেও আল-আমীন শারীরিক উচ্চতায় ৩৬ ইঞ্চি হওয়ায় তার বিয়ে হচ্ছিলনা। এ নিয়ে তার বাবা ও মা সব সময় চিন্তিত থাকতেন।
ছেলের চিন্তায় সর্বদা তার বাবা মা বুকে একটা চাপা কষ্ট বয়ে বেড়াত। কেবল ভাবতেন তার ভবিৎষত নিয়ে। আল-আমীনের বাড়ী পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড উত্তর শর্ষিনা গ্রামে। অপরদিকে, ছামিয়া আক্তার সাম্মি(২১)। বাড়ী উপজেলার সুটিয়াকাঠি ইউনিয়নের বালিহারি গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ী।
সাম্মি শারীরিক উচ্চতায় মাত্র ৩০ ইঞ্চি। তার বাবা আব্দুল শাহজাহান মিয়াও সব সময় চিন্তা করতেন মেয়ের বিয়ে নিয়ে। কিন্তু মেয়ের জন্য কোন ছেলে পাচ্ছিলেননা।
অবশেষে দুই পরিবারের পিতা-মাতার চিন্তার অবসান হয়েছে বিধাতার হুকুমে। দুই পরিবারের সম্মতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অনেকটা জমকালো পরিবেশে হয়েছে ওই দুই তরুন তরুনির বিয়ে। এক লক্ষ টাকার দেনমহরের ওই বিয়েতে ত্রিশজন হয়েছে বরযাত্রি।
বৃহস্পতিবার বিয়ে শেষে কনে ছামিয়া আক্তার সাম্মিকে বধূ বেশে ওই দিনই বর আল-আমীনের বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়। বেটে তরুন তরুনির বিয়ের খবর শুনে বিকেল থেকেই উৎসুক মানুষেরা ভীড় জমাচ্ছেন আল-আমীনের বাড়ীতে। আসছেন অনেক জনপ্রতিনিধি সহ নানান সামাজিক ব্যক্তিবর্গও। তাদের বিয়ের খবরে খুশি এলাকাবাসিও।
উত্তর শর্ষিনা গ্রামে আল আমীন-শাম্মি দম্পতিকে একনজর দেখতে এবং শুভকামনা জানাতে বর-কনের বাড়িতে ভিড় করছেন আশপাশের এলাকার মানুষ। তাদের কেউ কেউ আবার উপঢৌকন নিয়েও আসছেন। বিয়ে করে কনেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর বর আব্বাসের বাড়ি এখন মানুষে সরগরম।
বরের বাবা আব্দুল হামেদ বলেন, ‘আমি সামন্য একজন ব্যবসায়ি। ছেলেটা খাটো। এজন্য অনেকদিন ধরে মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে উপজেলার বালিহারি গ্রামে একটি মেয়ে খুঁজে পাই। জানতে পারি গ্রামের শাহজাহান মিয়ার মেয়েও কম উচ্চতার। বিয়ের প্রস্তাব পাঠালে তারা রাজি হয়।’
ইউপি সদস্য দেব কুমার বলেন, ওদের বিবাহের খবর শুনে আমি সহ এলাকাবাসি বেজায় খুশি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরের বাড়ি গিয়ে তাদের জন্য আর্শিবাদ করে এসেছি। উপরওয়ালা যেন ওদের দাম্পত্য জীবন সর্বদা সুখী রাখে।