পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী: ফিল্ড মার্শাল মুনির

লেখক:
প্রকাশ: ৩ ঘন্টা আগে

আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে স্থান পাওয়া পাকিস্তানের সেনাপ্রধান চিফ অব স্টাফ ও ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বলেছেন, “পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী। এই বাহিনীর সেনারা আল্লাহর নামে লড়াই করে।”

 

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের বাসভবনে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ ইবন আল হুসেইনের সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজের সময় দেশটির ‘ডেইলি জং’ নামে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি।

 

 

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে কোনো আগ্রাসন এলে তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আসিম মুনির। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনো রকম আগ্রাসন হলে ক্ষিপ্রতা ও কঠোরতার সঙ্গে দাঁতভাঙা উত্তর দেওয়া হবে।”

 

ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে আকাশের দিকে আঙুল উঁচিয়ে ইশারা করেন ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির।

তিনি বলেন, “পাকিস্তানের বিজয়ের পথে আমি নেতৃত্ব দিইনি; আল্লাহ দিয়েছেন। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে গত মে মাসে পাকিস্তানের শত্রুরা নিহত হয়েছিল। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী।  আল্লাহর নামে লড়াই করে এই বাহিনীর সেনারা।”

 

গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়। ভারত শুরু করে হামলা। ৫ ও ৬ মে রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ভারত। তবে সমানে সমান জবাব দেয় পাকিস্তান। ভারতের সাতটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ছয় দিনের লড়াইয়ের পর ১০ মে ভারত-পাকিস্তানে যুদ্ধবিরতি হয়।

এই যুদ্ধে পাকিস্তান নিজেদের বিজয়ী দাবি করে। জয়ের পুরস্কার হিসেবে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘ফিল্ড মার্শাল’ খেতাব দেয় দেশটির সরকার।

 

এই যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারীর কৃতিত্ব দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভারত তা প্রত্যাখ্যান করে। অবশ্য পাকিস্তান পুরো কৃতিত্ব ট্রাম্পকে দেয়। শুধু তাই নয়, কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব করে পাকিস্তান সরকার।

সেই থেকে ট্রাম্প ও ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের মধ্যে সখ্য তৈরি হয়। দুইবার ট্রাম্প তাকে হোয়াইট হাউসে ডেকে নিয়ে একসঙ্গে খেয়েছেন, রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন। বিদেশি একজন সেনাপ্রধানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের এমন বৈঠক সাধারণত বিরল।

 

ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ এবং ট্রাম্পের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠা আসিম মুনির পাকিস্তানের ক্ষমতার কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠেছেন। সংবিধান সংশোধন করে তাকে আমৃত্যু আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইচ্ছামতো মেয়াদে পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের অসীম ও নজিরবিহীন সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল জিও নিউজের অনলাইন সংস্করণে লেখা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে রবিবার (১৬ নভেম্বর) পবিত্র কোরআনের আয়াত মনে করিয়ে দিয়ে আসিম মুনির বলেন, “আল্লাহ ইমানদারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, বিশ্বাসের সঙ্গে লড়লে তারা যেকোনো শত্রুকে পরাজিত করতে পারবে, সেখানে শত্রুরা যত শক্তিশালীই হোক না কেন। পাকিস্তান এই দৃষ্টান্ত গত মে মাসেই দেখিয়ে দিয়েছে।”

 

পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীর পর নতুন আইন অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হিসেবে যেকোনো অপরাধ বা অভিযোগের ক্ষেত্রে আজীবন আইনগত দায়মুক্তি ভোগ করবেন তিনি। নজিরবিহীন এই ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার পর তিনি বললেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী।