পল্লী উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদক দিয়েছে ‘সেন্টার অন ইন্ট্রিগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ (সিরডাপ)। রোববার (২৯ মে) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক ২০২১’ তুলে দেন সিরডাপের মহাপরিচালক ডা. চেরদসাক ভিরাপা। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।
পুরস্কারটি জনগণকে উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে সিরডাপ কর্তৃক ‘আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক ২০২১’ প্রদান করায় আমি মনে করি এটা আমার বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য। আমি তাদের জন্য এ পদক উৎসর্গ করছি। এ পদক প্রাপ্তির জন্য আমাকে মনোনয়ন করা মানে বাংলাদেশকে মনোনয়ন করা।
তিনি বলেন, সিরডাপ সবসময় তাদের সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে পল্লী উন্নয়নের ওপর কাজ করে। সেখান থেকে একটা পুরস্কার পাওয়া এটা শুধু আমার জন্য আমার দেশের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক; বাংলাদেশকে সম্মান জানানো।
সরকার একেবারে গ্রাম থেকে উন্নয়নের কাজ করছে জানিয়ে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবসময় লক্ষ্য যে এদেশের উন্নয়নটা তৃণমূল থেকে হবে। গ্রাম থেকে হবে। আর সেই লক্ষ্য সামনে নিয়ে আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়েছি। যখনই সরকার গঠন করেছি আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, পল্লী উন্নয়নটা অর্থাৎ গ্রামের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করতে পারলে দেশের উন্নয়ন হয়। সেটাই আমরা বিশ্বাস করি। দেশের উন্নয়ন করতে হলে একেবারে তৃণমূলের মানুষকে বাদ দিয়ে কখনো উন্নয়ন হতে পারে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম তৃণমূল ঘিরে। যেমন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বো আমাদের ডিজিটাল সেন্টার প্রথমে কিন্তু সেই চর কুকরিমুকরি থেকে শুরু করি। অর্থাৎ একেবারে রিমোট এলাকা সেখানে আমরা শুরু করি।
গ্রামের মানুষকে স্বাবলম্বী করতে নিজস্ব চিন্তা থেকে প্রথমে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন তিনি।
গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। যেখানে গ্রামের মানুষ পায়ে হেঁটে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে।
সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে এখন প্রায় শতভাগ শিশু স্কুলে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষার জন্য প্রতি দুই কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় করা। যাতে করে ছেলেমেয়েরা হেঁটে স্কুলে যেতে পারে। আমাদের প্রাইমারি শিক্ষা যেমন অবৈতনিক, পাশাপাশি আমাদের নারীশিক্ষাও অবৈতনিক। সেই সঙ্গে তৃণমূলে মায়েরা যখন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠায় মায়েদের নামে আমরা বৃত্তি দেই।
সরকার প্রায় শতভাগ মানুষকে সুপেয় পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্য-শিক্ষা, বাসস্থান- এগুলো মানুষের মৌলিক চাহিদা, আমাদের এখন যত মানুষ গৃহহীন আছে অর্থাৎ ভূমিহীন-গৃহহীন তাদের আমরা বিনা পয়সায় ঘর করে দিচ্ছি। যাতে একটা ঘর পেলে সেটাই মানুষের কর্মসংস্থান হয়।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষকে সহায়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা- এগুলো আমরা দিচ্ছি, সেটাও মানুষের আর্থ-সামাজিক কাজে লাগে। এগুলো সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্ব পরিকল্পনা, নিজস্ব চিন্তা-ভাবনার ফসল। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে।