গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে দেশের মিডিয়া হাউজগুলোর ওপর ক্ষোভ ঝারলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘ছবি না দিয়ে আমাদের জনপ্রিয়তা ঢাকা যাবে না, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা ঢাকা যাবে না। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা সারা বাংলায়।’
রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় কর্ণফুলীর ক্রসিং এলাকার এসআর স্কয়ারের সামনে চট্টগ্রামের প্রথম পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গতকাল মহানগর নাট্যমঞ্চে ৩০ দলের সমাবেশে দুই হাজার লোকও হয়নি আর আওয়ামী লীগের পথসভা লোকারণ্য হয়েছে। লাখ লাখ মানুষের ঢল নেমেছে। মিডিয়ার একটি মহল তাদের ছবি বড় করে প্রচার করেছে, অথচ আমাদের সিঙ্গেল ছবি দিয়েছে, সমাবেশের লাখো মানুষের ছবি দেয়নি।’
‘মিডিয়ার পছন্দ হয় না। কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন। যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা,’ যোগ করেন কাদের।
সংবাদ সংগ্রহে ঢাকা থেকে আসা সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে যারা এসেছেন, তারা মিডিয়ার এই কাভারেজটা অন্তত দেবেন। বিএনপি ৫০০ জনের মিটিং করে, সেটা বিরাট করে পত্রিকায় ছাপান। আর আমরা মিটিং করলে, কোনোমতে শেখ হাসিনার সিঙ্গেল ছবি আসে।’
কোটা আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে কাদের বলেন, ‘চোখ চলে গেছে আওয়ামী লীগের কর্মীর। কোনো কোনো মিডিয়া প্রচার করল যে, আন্দোলনরত এক ছাত্রের চোখ চলে গেছে। এটা কী? গুজবসন্ত্রাস। এটা এখনও আছে। এই গুজবসন্ত্রাস প্রতিরোধ করতে হবে। আন্দোলনের নামে গুজবসন্ত্রাস প্রতিরোধ করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিবের জাতিসংঘ সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিবের নামে নাকি একটি চিঠি এসেছে, উনাদের নাকি দাওয়াত দিয়েছে। ফখরুল সাহেব পত্রপত্রিকা-মিডিয়ায় প্রচার করেছেন যে জাতিসংঘের মহাসচিব তাকে দাওয়াত করেছেন। তিনি জাতিসংঘে গেলেন। মহাসচিব তখন ঘানায়। মহাসচিব যুক্তরাষ্ট্রে নেই। তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে অনেক অনুনয়-বিনয় করে কিছুক্ষণ কথা বলেছেন। নালিশ করে দেশে ফিরে এসেছেন।’
এ সময় বিএনপি ও দলটির মহাসচিবকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেও স্লোগান দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেন, ‘ভুয়া ভুয়া ভুয়া।’ উপস্থিত জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন করেন কে ভুয়া? উত্তরে তারা বলেন, ‘বিএনপি ভুয়া’। সঙ্গে সঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুলও ভুয়া।’ পরে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘ধানের শীষ পেটের বিষ, ধানের শীষ সাপের বিষ।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বহরটি কর্ণফুলীর ক্রসিং ও পটিয়ার পথসভা শেষ করে বর্তমানে লোহাগাড়ার চুনতির মেহেরুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সুধী সমাবেশের পথে। চকরিয়া বাস টার্মিনাল, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ এবং রামুতেও একটি জনসভায় যোগদানের কথা রয়েছে তাদের।
সাংগঠনিক দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দলের অন্য সদস্যরা হলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।