পটুয়াখালীতে ১৭ বার থানায় গেলেও মামলা নেয়নি ওসি

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার এই স্লোগান বাস্তবায়নে কাজ করছে পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম বার। মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে প্রতিটি থানা ও কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

বিভিন্ন সভায় তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য কড়া হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন জনগণকে তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করার জন্য ।পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন থানাগুলো হবে নির্যাতিত মানুষের শেষ ভরসাস্থল।আর ওসি হবে ঐ থানা এলাকার সামাজিক নেতা যিনি সব সময় মানুষের জন্য কাজ করবে।

আইজিপি’র সেই নির্দেশ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ পিপিএম সেবা।মানবিক কাজ ও জনবান্ধব থানা গঠনে তিনি কঠোর মনিটরিং করে যাচ্ছেন।

তবে কিছু কিছু দুষ্টু কর্মকর্তাদের কারণে শতভাগ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না জনবান্ধব পুলিশ গঠন করার সেই প্রকৃয়া।জনবান্ধব কাজ করতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনা অমান্য করে নিজের ইচ্ছা স্বাধীন মতো কাজ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে পটুয়াখালী জেলার দুমকী থানার ওসি মোঃ মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে এক ভুক্তভোগী নারী তার কাছে আইনি সেবা পাওয়ার জন্য ১বার ২বার নয় বরং ১৭ বার গেলেও মামলা নেয়নি তিনি। উল্টো মামলা দায়ের না করার জন্য ভুক্তভোগীকে হুমকি প্রদান করেছেন ওসি মোঃ মেহেদী হাসান ।

মূল ঘটনা জানার জন্য অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে ভুক্তভোগী নুরুন্নাহার বেগমের সাথে দুমকী থানার চরবয়রা গ্রামের নাসির খানের ছেলে সেনা সদস্য রেজাউল (৪০) এর সাথে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ চলছে।

সেনা সদস্য রেজাউলের ঘরের পিছনে ভুক্তভোগী নারীর জমি রয়েছে।সেই জমি দখলের জন্য রেজাউল অনেক দিন যাবত চেষ্টা করে যাচ্ছে।কোন ভাবেই অবৈধ ভাবে দখল করতে না পেরে ভুক্তভোগীকে বিক্রি করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।

এছাড়াও ভুক্তভোগী জমি বিক্রি করার নামে রেজাউলের নিকট থেকে টাকা নিয়েছে বলে বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে রেজাউলের পরিবার।

কিন্তু সকল চাপ উপেক্ষা করে জমি বিক্রি না করে নিজের দখলে রাখার সিধান্তে অটল থাকেন।ঘরের পিছনের জমি দখলে নিতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যখন নিষ্ফল হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় সেনা সদস্য রেজাউল।

এরপর রেজাউল তার স্ত্রী রিনা বেগমকে দিয়ে নতুন একটা ফাঁদ পাতেন।গোপনে স্ত্রী রিনাকে দিয়ে ভুক্তভুগীর কিছু ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। সমাজে হেয় পতিপন্ন করার জন্য পরবর্তীতে সেই ভিডিও বিভিন্ন ভাবে এডিট করে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন সেনা সদস্য রেজাউল।

ফেসবুকে পোস্ট করার পর লোকলজ্জার ভয়ে পরে যায় ভুক্তভোগী ঐ নারী।গোপনে ভিডিও ধারণ করে সম্মান নষ্ট করার বিচার পেতে থানা পুলিশের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু সমাধান করার কথা বলে ১৭ বার থানায় ডেকেও মামলা নেয়নি ওসি মোঃ মেহেদী হাসান।

এ বিষয় ভুক্তভোগী নুরুন্নাহার অভিযোগ করে বলেন,,আমার প্রতিবেশী সেনা সদস্য রেজাউলের ঘরের পিছনে আমার জমি আছে।

দীর্ঘ দিন যাবত তিনি সেই জমি দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।এছাড়াও জমি বিক্রি করার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করছে।

কিন্তু আমি সব সময় সেই চাপ প্রতিরোধ করেছি।কোন উপায় না পেয়ে রেজাউল তার স্ত্রী রিনাকে দিয়ে আমার ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে আজেবাজে কথা লিখে পোস্ট করে।

ঘটনার বিচার পেতে আমি দুমকী থানার ওসি মোঃ মেহেদী হাসানের কাছে যাই। তিনি বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে ১৭ বার থানায় নিয়েছে কিন্তু মামলা নেয়নি জিডি নিয়েছে।

পাশাপাশি হুমকি প্রদান করেছে যদি আমি রেজাউলের বিরুদ্ধে মামলা করি তাহলে আমার ছেলেকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে।

তিনি আরও বলেন,, ওসি মেহেদী এর আগেও অনেক বিতর্কিত কাজ করেছে। একজন পুলিশ সদস্যর পরিবারের উপর হামলা হলেও তিনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

মামলা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্দেশ প্রদান করার পরেও ওসি মেহেদী মামলা না নিয়ে ঐ পরিবারকে জিডি করতে বলেন।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমি পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ বিষয় দুমকী থানার ওসি মোঃ মেহেদী হাসানের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয় পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ পিপিএম সেবা বলেন,, কোন পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরণ কাম্য নয়, ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।