‘ভাঙা দুটি পায়ে জয়ের ভাগ্য লুটিয়া আনিল আজি’। পল্লি কবি জসিমউদ্দিনের ‘ফুটবল খেলোয়াড়’ কবিতার লাইন। মেসের ইমদাদ ভাইয়ের ভাঙা পা নিয়ে ম্যাচ জয়ের কাহিনী নিয়ে লিখেছিলেন কবি। এবার ‘ভাঙা পা’ নিয়ে এক গোল করে এবং ফিরমিনোকে দিয়ে দারুণ এক গোল করিয়ে জয় ছিনিয়ে আনলেন নেইমার। তাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেছে সেলেকাওরা।
দ্বিতীয় রাউন্ডের পঞ্চম ম্যাচে রোববার রাশিয়ার সামারায় প্রথমার্ধে ব্রাজিলকে আটকে দেয় মেক্সিকো। গোল শূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ মিনিটে নেইমারের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। উইলিয়ানের দেওয়া ক্রসে পা ছুঁইয়ে দলের প্রথম লিড এনে দেন ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমার। এরপর ম্যাচের ৮৮ মিনিটে নেইমারের যেভাবে গোল করেছিলেন অনেকটা তেমন এক পাস ফিরমিনোকে দেন পিএসজি তারকা নেইমার। তা থেকে গোল করে ব্যবধান ২-০ করেন ফিরমিনো।
তাতে শেষ হয়ে গেল মেক্সিকোর স্বপ্ন। দেশটি সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠেছিল। এরপর আটটি আসরে দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে বিদায় নিতে হলো মেক্সিকোর। প্রথমার্ধে মেক্সিকো ব্রাজিলের গোল মুখে ভালো কিছু আক্রমণ করে। চাপে ফেলে দেয় ব্রাজিলকে। কিন্তু সে চাপ বেশিক্ষণ নিজেদের ওপরে রাখতে দেয়নি ব্রাজিল। পরক্ষণেই মেক্সিকোর গোলে ভালো কিছু আক্রমণ করে সেলেকাওরা। কিন্তু গোল হতে দেননি মেক্সিকো গোলরক্ষক ওচোয়া।
প্রথমার্ধে এবং দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ কিছু সেভ করেন মেক্সিকো গোলরক্ষক। কৌতিনহো, উইলিয়ান, জেসুস থেকে নেইমার সবার শট ফিরিয়েছেন এই গোলরক্ষক। কিন্তু গোলবার অক্ষত রাখেতে পারেননি। ম্যাচের দুই মিনিটের মাথায় প্রথম আক্রমণ করে মেক্সিকো। এরপর ৫ মিনিটের মাথায় আক্রমণ করে ব্রাজিল। কিন্তু ২০ গজ দুর থেকে নেইমারের মারা শট ঠেকান মেক্সিকো গোলরক্ষক।
২২ মিনিটের আক্রমণ আবার ছিল মেক্সিকোর। ফাগনারকে কাটিয়ে ঢুকে পড়ে মেক্সিকো। কিন্তু গোলবারে যায়নি তাদের আক্রমণ। ২৫ মিনিটে আবার নেইমারের শট ঠেকান মেক্সিকো গোলরক্ষক। ৩২ মিনিটে কৌতিনহোর শটনি বাইরে দিয়ে যায়। প্রথমার্ধের শেষ বাঁশির আগে শেট আক্রমণ করেন জেসুস।
ম্যাচের ৬৩ মিনিটে উইলিয়ানের দারুণ শট ঠেকান ওচোয়া। ৬৯ মিনিটে মেক্সিকোর ভালো একটি আক্রমণ প্রতিহত করেন অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা। এরপর ম্যাচের ৮৬ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে ঢোকেন রবার্তো ফিরমিনো। সাবেক লিভারপুল সতীর্থ কৌতিনহোর বদলে দলে সুযোগ মেলে তার। মাঠে ঢোকার দুই মিনিট পরে গোল করে দলের ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।
ম্যাচে অবশ্য মেক্সিকো বল দখলের প্রতিযোগিতায় ব্রাজিলের সমানে সমানে ছিল। ব্রাজিলের ৪৯ ভাগ বল দখলের পাশাপাশি তারা ৫১ ভাগ বল পায়ে নিয়ে খেলেছে। তবে আক্রমণে ছিল পিছিয়ে। ব্রাজিল ১৬টি শটের পাশে তার শট নিতে পেরেছে মাত্র ছয়টি। তার মধ্যে ব্রাজিলের ১০টি শট ছিল লক্ষ্যে। আর মেক্সিকো মোটে একটি শট গোলের লক্ষ্যে নিতে পেরেছে। সোমবার রাত ১২ টায় বেলজিয়াম-জাপান মুখোমুখি হবে। তাদের মধ্যে যারা জিতবে ৬ জুলাই ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে তারা।