কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে সবচেয়ে বড় চুক্তিটা করে ফেলার পর থেকেই গুঞ্জন শুরু, নেইমারকে চলে যেতে হবে পিএসজি ছেড়ে। ক্লাবটির কর্মকর্তারাই চিন্তা করছেন নেইমারকে বিক্রি করে দেবেন। ২২২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ২০১৭ সালে পিএসজিতে আসার পর যে মিশন ছিলো নেইমারের সেটা তো পূরণ হয়ইনি, বরং নেইমারের পেছনে উল্টো আরো খরচই হচ্ছে শুধু।
অথচ, নেইমার বারবার বলছেন একটিমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের জন্য হলেও পিএসজিতে থাকতে চান তিনি। অন্য কোথাও যেতে চান না।
কিন্তু এরই মধ্যে খবর প্রায় চূড়ান্ত। নেইমারকে ছাড়বেই পিএসজি। পিএসজি কোচ মাওরিসিও পোচেত্তিনোর প্যারিস ছাড়ার বিষয়টাও প্রায় চূড়ান্ত। যে কোনো সময় ঘোষণা আসতে পারে। পিএসজিতে যোগ দিয়েছেন নতুন স্পোর্টিং ডিরেক্টর লুইস ক্যাম্পোস। যার তৈরি করা রূপরেখাতেই আগামী মৌসুমে চলবে প্যারিসের ক্লাবটি।
লুইস ক্যাম্পোসের তৈরি করা নতুন দিক-নির্দেশনায় নেইমারের ঠাঁই নেই। যে কারণে তারা এরই মধ্যে বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্রে মার্কেটে প্রচার করে দিয়েছে, ৫০ মিলিয়ন ইউরোয় ব্রাজিলিয়ান তারকাকে বিক্রি করে দেবেন।
স্পেনের বিখ্যাত সাংবাদিক হোসে আলভারেজ এল চিরিঙ্গুইটো টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেন। তিনি জানান, বার্সেলোনার সামনে বড় একটি সুযোগ এসেছে ৫০ মিলিয়ন ইউরোয় নেইমারকে দলে টানার। শুধু তাই নয়, নেইমারকে কেনার এই সুযোগটা লুফে নিতে পারে রিয়াল মাদ্রিদও।
পিএসজিতে যোগ দেয়ার পর নেইমারের ফিটনেস ইস্যুটাই সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয়। অধিকাংশ সময়ই তাকে ইনজুরিতে থাকতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে যান। এসব কারণে গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচের সময় নেইমারকে পিএসজি সমর্থকদের কাছ থেকে ধুয়ো ধ্বনিও শুনতে হয়েছিল।
পিএসজির হয়ে ১৪৪টি ম্যাচ খেলে এখনও পর্যন্ত ১০০ গোল করেছেন এবং ৬০টি গোলে অ্যাসিস্ট করেছেন। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয় পিএসজিতে তার রেকর্ড দুর্দান্ত।
গোল ডটকমের রিপোর্ট মতে, নেইমারের আচার-ব্যবহার এবং তার বাজে ফর্ম পিএসজি কর্মকর্তাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ কারণেই তারা তাকে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত। এছাড়া কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান এই তারকার সম্পর্কও দিন দিন তলানীতে যাচ্ছে।
মেসির ছায়া থেকে বের হওয়ার জন্য পিএসজিতে এসেছিলেন নেইমার। হয়েছিলেন ক্লাবটির প্রধান খেলোয়াড়। কিন্তু এমবাপের নতুন চুক্তির পর নেইমারের অবস্থান চলে গেছে অনেক পরে। এমবাপেই এখন পিএসজির প্রধান খেলোয়াড়। এরপর আছেন মেসি। তারপরই নেইমার।
সম্প্রতি পিএসজি প্রেসিডেন্ট নাসের আল খেলাইফিকে নেইমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘ক্লাবের নতুন প্রজেক্টে নেইমার অংশ কি না? আমরা কিছু খেলোয়াড় সম্পর্কে আসলে প্রকাশ্যে কথা বলবো না। কিছু খেলোয়াড় আসবে, কিছু খেলোয়াড় যাবে। এটাই তো নিয়ম। এখানে কিছু ব্যক্তিগত বা গোপনীয় আলোচনা থাকে।’
বার্সেলোনা নেইমারের যোগ্যতা সম্পর্কে ভালোই জানে। তারা এরই মধ্যে রবার্ট লেওয়ানডস্কিকে কেনার জন্য দর কষাকষি করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে নেইমারের বিষয়টা সামনে আসায় তাদের কাছে অপশন বেড়ে গেছে। কোচ জাভি হার্নান্দেজ এক সময় ক্যাম্প ন্যুতে নেইমারের সঙ্গে খেলেছেন। তিনি ভালো করেই জানেন নেইমার সম্পর্কে। সুতরাং, নেইমারের আবার বার্সায় ফেরা হতেই পারে। এতে বিস্ময়ের কিছু নেই।
তবে ইউরোপিয়ান দলবদলের বাজারে যখন নেইমারকে পিএসজির বিক্রির বিষয়টি চাউর হয়ে গেছে, তখন তাকে কেনার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বেশ কয়েকটি দল। এদের মধ্যে রয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব চেলসি, ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসও।