নবজাতকের শ্বাসরুদ্ধকর ২৩ দিন!

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

মায়ের গর্ভ থেকে পৃথিবীর আলো দেখার পর গত ২৪ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় কেটেছে এক নবজাতকের। এমনকি গর্ভধারিনী মায়ের বুকের দুধটুকুও জোটেনি। অবশেষে শ্বাসরুদ্ধকর দীর্ঘ ২৩ দিন পর মায়ের কোল ফিরে পেয়েছে সেই নবজাতক।

২৪ জানুয়ারি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর থেকে চুরি হওয়া নবজাতককে অবশেষে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সোনাডাঙ্গা থানার পুলিশ নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পাড়বিষ্ণুপুর এলাকা শিশুটিকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ওই শিশুটির পালক বাবা-মাকে হেফাজতে নিয়েছে। তবে নবজাতক চুরিতে অভিযুক্ত সেই নারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাডাঙ্গা থানার এস আই তোফায়েল আহমেদ তোফু বলেন, ‘হারিয়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা ছিল। বিভিন্নস্থানে সোর্স লাগানো ছিল। সোর্স মারফত আমরা খবর পাই হারিয়ে যাওয়া শিশুটি নড়াইল কালিয়া উপজেলার পাড়বিষ্ণুপুর এলাকার রাশেদ মোল্লার বাড়ির ভাড়াটিয়া রানু খানম ও লালন মোল্লা দম্পত্তির কাছে রয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে শিশুটির মামা মোস্তফাকে সেখানে পাঠানো হয়। তার দেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে আমরা সেখানে যাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিশুটির পালক বাবা-মায়ের কোনো সন্তান নেই। ১২ বছর ওই দম্পত্তির বিয়ে হয়েছে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় র‌্যাবের সহায়তায় আমরা পাড়বিষ্ণুপুর এলাকার রাশেদ মোল্লার বাড়িতে পৌঁছাই। শিশুটির সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। তারপর স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে প্রকৃত সত্যটি বের হয়ে আসে। স্থানীয়রা জনায়, শিশুটি তারা ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ঢাকা থেকে কিনেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘লালন মোল্লা পেশায় একজন কৃষক। শিশুটি কিনতে যে টাকা দিয়েছেন, সেটি দেওয়ার মতো তার কোনো ক্ষমতা নেই। শিশুটি কীভাবে নড়াইলে পৌঁছেছে এবং কার কাছ থেকে তারা কিনেছেন সেটি জানার জন্য পালক বাবা-মাকে থানা হেফজতে নেওয়া হয়েছে।’

সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মমতাজুল হক বলেন, ‘নবজাতক চুরির ঘটনায় শিশুটির বাবা পাঁচ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় পাঁচ জন কারাগারে রয়েছে। নবজাতক উদ্ধার নিঃসন্দেহে পুলিশের একটা বড় সাফল্য। শিশুটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে রয়েছে। তবে ঘটনার জন্য যে দায়ী, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

নবজাতকের মা রানিমা বেগম জানান, তিনি নিজের সন্তানকে চিনতে পেরেছেন। বাচ্চাকে ফিরে পাওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন রানিমা।

রানিমা জানান, ২৪ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুরের দিকেই তিনি সুস্থ বাচ্চা জন্ম দেন। বিকেল পাঁচটার দিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। ছাড়পত্র নিয়ে তারা বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাড়ি ফেরার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের গেটে আসেন। এসময় নবজাতকের বাবা তুরাব আলি ও আত্মীয়স্বজন অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা নিয়ে কথা বলছিলেন। অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায় তা হাতাহাতি পর্যন্ত পৌঁছায়। নবজাতকটি ছিল তার খালার কোলে। হাতাহাতি ঠেকাতে সে কোলে থাকা নবজাতককে পাশের এক নারীর কাছে দেয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে বাচ্চা নিতে গিয়ে দেখে ওই নারী সেখানে নেই। মুহূর্তের মধ্যে পুরো হাসপাতালে শোরগোল পড়ে যায়।

 
ক্যাম্পাসজাতীয়প্রচ্ছদবরিশাল এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
লাইফ সাপোর্টে থাকা অভিনেতা ও নির্মাতা হুমায়ূন সাধু মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। গণমাধ্যমকে ফারুকী বলেন, রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন হুমায়ূন সাধু। সেখানেই তার মৃত্যু হয় গত ২৯ সেপ্টেম্বর হুমায়ূন সাধুর প্রথম ব্রেন স্ট্রোক হয়। তখন তাকে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে ১৩ অক্টোবর রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। এরপর তাকে বিদেশে নিয়ে অস্ত্রোপচারেরও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০ অক্টোবর হঠাৎ সাধুর দ্বিতীয় ব্রেন স্ট্রোক হয়। এরপর তাকে স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ছবির মাধ্যমে অভিনয়ে পথ চলা শুরু হুমায়ূন সাধুর। অভিনয়ের পাশাপাশি নাটকও নির্মাণ করেছেন তিনি।
৫ years ago