দূষণের কবলে বরিশালের বিবিরপুকুর

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

দূষণের কবলে পড়েছে বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডের দর্শনীয় বিবিরপুকুর। চাষ করা মাছ পচে ও আশপাশের বিভিন্ন ক্লিনিক-হাসপাতালের বর্জ্য ফেলায় দুর্গন্ধ সৃষ্টি হচ্ছে পানিতে। ফলে নগরীর অন্যতম দর্শনীয় স্থানটিতে মানুষ এখন সময় কাটাতে পারছেন না। ব্যবহার উপযোগিতা হারাচ্ছে এর পানিও।

জানা যায়, নগরীর প্রাণকেন্দ্রের পুকুরটিতে কোনো ধরনের ইজারা ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী আকতার উজ্জামান হিরু। মাছ চাষের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কীর্তনখোলা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত দুটি স্যুয়ারেজ লাইনও। ফলে জোয়ার-ভাটার পানি পুকুরে আসতে না পেরে এটা বদ্ধপুকুরে পরিণত হয়েছে।

নগরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মশিউর দিপু জানান, তিনি শনিবার রাতে হেঁটে যাওয়ার সময় পুকুরে অসংখ্য মরা মাছ ভাসতে দেখেন। ওই মাছ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পুকুর সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারুল হক তারিন বলেন, পুকুরটির সঙ্গে কীর্তনখোলা নদীর দুটি সংযোগ ছিল। যার মাধ্যমে জোয়ার-ভাটার পানি আসা-যাওয়া করত। সংযোগ বন্ধ করে মাছ চাষ করায় পানি নষ্ট হয়ে গেছে। দ্রুত পুকুরটির সংস্কারের দাবি জানান তারা।

বিবিরপুকুরের এমন হাল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বরিশাল নদী-খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু। তিনি বলেন, বিবিরপুকুর বরিশালের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এটি দেখতে আসে। বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করায় পুকুরের পানি নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশের ক্লিনিকগুলো বর্জ্য ফেলায় পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পুকুরটি রক্ষণাবেক্ষণে করপোরেশনের বিশেষ বরাদ্দ থাকা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জানতে চাইলে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী আকতার উজ্জামান হিরু বলেন, গত কয়েকদিনের বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছু মাছ মরে ভেসে উঠেছিল। এখন পুকুরটি পরিস্কার করার কাজ চলছে। তিনি বলেন, পুকুরটিতে মাছ চাষের পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণও করতেন তিনি। এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পুকুরটির দায়িত্ব করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করবেন।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল হাসান বলেন, বিবিরপুকুরে একজন কাউন্সিলর মাছ চাষ করছেন। সৌন্দর্য বিকাশের জন্য পুকুরটি বিসিসির তত্ত্বাবধানে আনার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। এ ছাড়া পাবলিক প্লেস হিসেবে পুকুরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য পানির মানোন্নয়ন ও চারপাশের সৌন্দর্য বর্ধনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।