ভারত সমর্থকেরা তেড়ে আসার আগেই স্বীকার করে নেওয়া যাক, এই প্রতিবেদক চোখে ভুল দেখছে না। তার জানা আছে, লর্ডসে কাগজে-কলমে এটা চতুর্থ দিন। ক্রিকেটের পরিসংখ্যান বলবে ইংল্যান্ড-ভারত টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে গড়িয়েছিল। কিন্তু ক্রিকেট খেলাটাকে শুধু পরিসংখ্যানের দিক থেকেই দেখতে হবে এমন দিব্যি কে কবে দিয়ে রেখেছে? তাই বলে ফেলা যাক লর্ডসে ইংল্যান্ডের কাছে ইনিংস ও ১৫৯ রানে ভারতের হারের ম্যাচটি দুই দিনেই শেষ হয়েছে।
দুই দিনের হিসাবটা দিয়েই দেওয়া যাক। বৃষ্টিতে প্রথম দিন ভেসে গেছে। দ্বিতীয় দিনেও খুব একটা খেলা গড়াতে পারেনি। তবু কষ্টেসৃষ্টে যে ৩৫.২ ওভার খেলা হয়েছে, তাতেই অলআউট হয় গেছে ভারত। তৃতীয় দিনেও পুরো সময় খেলা হয়নি। আলোকস্বল্পতায় মাঠ ছাড়ার আগে ৮১ ওভার ব্যাট করেছে ইংল্যান্ড। আজ চতুর্থ দিনে ৪৯ বল খেলেই ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছে স্বাগতিক দল। আর দ্বিতীয় ইনিংসে চেতেশ্বর পূজারা কিংবা রবিচন্দ্রন অশ্বিনের প্রতিরোধও ওভারের বেশি টেকাতে পারেনি ভারতকে।
হিসাব নিকাশ শেষে দেখা যাচ্ছে, পুরো লর্ডস টেস্টের দৈর্ঘ্য ১৭০.৩ ওভার। এক দিনে ৯০ ওভারের সরল হিসাব মানলে দুই দিন খেলা হয়েছে, এটা বলা যাচ্ছে না। সুইং বোলিংয়ের আদর্শ কন্ডিশনের কোনো জবাবই ছিল না ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের কাছে। দুই ইনিংসেই ভারতের সর্বোচ্চ স্কোরার অশ্বিন। প্রথম ইনিংসে ২৯ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে হার না মানা ৩৩। অশ্বিনের দুর্ভাগ্য তিনি হার না মানতে চাইলেও বিখ্যাত ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ বহু আগেই হার মেনে নিয়েছে।
ভারতের ভাগ্য ভালো, হার্দিক পান্ডিয়া সপ্তম উইকেটে অশ্বিনকে কিছু সঙ্গ দিয়েছেন। ৬৯ বলে ৫৫ রানের সে জুটিতেই এক শ পেরিয়েছে ভারত। বিজয়, রাহুল, রাহানে, কোহলি সমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইনআপ এর আগে ৬ উইকেটে ৬১ রানের ভগ্নদশা পেয়ে বসেছে। এদের মধ্যে পূজারাকে যুক্ত করা যাচ্ছে না। স্টুয়ার্ট ব্রডের বল ব্যাট প্যাড হয়ে স্টাম্পে আঘাত হানার আগে সর্বোচ্চটাই দিচ্ছিলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। কিন্তু ১৭ রানের ইনিংসটা ৮৭তম বলেই থেমে গেছে।
জেমস অ্যান্ডারসনের ইতিহাসে নাম লেখানো অবশ্য এর অনেক, অনেক আগেও হয়ে গেছে। শূন্য হাতে মুরালি বিজয়কে ফিরিয়ে লর্ডসে নিজের ১০০তম উইকেট পেয়েছেন এই পেসার। প্রথম কোনো পেসার হিসেবে কোনো নির্দিষ্ট ভেন্যুতে উইকেটের সেঞ্চুরি হলো অ্যান্ডারসনের। আবার এটাই ছিল টেস্টে তাঁর ৫৫০তম উইকেট। টেস্টে ১৫০তম ওপেনার হিসেবে অ্যান্ডারসনের বলে আউট হওয়ার রেকর্ডটাও সঙ্গী হয়েছে বিজয়ের। প্রথম ইনিংসে ২০ রানের ৫ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩ রানে ৪ উইকেট। ইংলিশ কন্ডিশনে অ্যান্ডারসনের জবাব ভারতীয় কারও জানা ছিল না।