নতুন কৃষক আইনের প্রতিবাদে ভারতের রাজধানী দিল্লি অভিমুখী কৃষকদের উপর কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিল্লির সীমানায় বদরপুরের কাছে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশের দিকে পাল্টা ইট-পাটকেল ছোড়েন কৃষকরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হরিয়ানা দিল্লির সীমানায় বদরপুরে ব্রিজের উপর কৃষকদের ঠেকাতে আগে থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনকরা হয়েছিল। কৃষকরা এগোতেই তারা পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। রাস্তায় দেওয়া ব্যারিকেড সরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তারা। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। খণ্ডযুদ্ধের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। প্রায় দু’ঘণ্টা পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
কৃষকদের বিক্ষোভে সামিল হয়েছিল যোগেন্দ্র যাদবের সংগঠন স্বরাজ ইন্ডিয়া। ঘটনাস্থলে যোগেন্দ্র নিজেও ছিলেন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মোদি সরকারকে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘পাখিদের ঘুম ভাঙার আগেই বিছানা ছেড়েছেন কৃষকরা। কালা কানুনের মেঘ গর্জন, অবিচারের বজ্রপাত, আর ঝড়বৃষ্টি থামছেই না। মোদি সরকারের নির্মমতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন দেশের কৃষকরা।’
সংসদের বিলম্বিত বর্ষা অধিবেশনে তিনটি কৃষক বিল উত্থাপন হলে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়। শেষ পর্যন্ত বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হয়েছে। ওই সময় ভারতজুড়ে প্রতিবাদ হয়েছিল আইন তিনটির বিরুদ্ধে। সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ-প্রতিরোধ হয়েছিল পাঞ্জাব ও হরিয়ানায়। সম্প্রতি কৃষক আইনের প্রতিবাদে আবারও ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দেয় পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যের বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে সেই প্রতিবাদ আন্দোলন। পাঞ্জাব থেকে হেঁটে দিল্লি রওনা দেন কৃষকরা। তবে মঙ্গলবার হরিয়ানায় একাধিক বার বাধা পেয়েছেন তারা। জলকামান ব্যবহার করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। হরিয়ানার বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে পাঞ্জাবের সঙ্গে সব সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। তবে সে সব বাধা পেরিয়ে বুধবারই দিল্লির উপকণ্ঠে এসে পৌঁছান কৃষকরা।