‘দা দিয়া কোপাইয়্যা গাল ও কান কাইট্টা দেছে’

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

টাকা না দেয়ায় তিন সন্তানের জননী ছকিনা বেগমের গাল ও কান কেটে দিলেন পাষণ্ড স্বামী হাবিব খান। বরগুনার আমতলী উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রোববার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালের বেডে বিষম ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি। অর্থাভাবে তার সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। ছকিনা হাবিবের প্রথম স্ত্রী। হাবিব খানকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ছকিনা বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর অইতে স্বামীর লগে দিনমজুরের কাম হইর‌্যা সংসার চালাই। স্বামী দ্বিতীয় বিয়া হরছে। হেইয়্যার পর হইতেই মোরে স্বামী অ্যাকছের জালায়। প্রায়ই আইয়্যা টাকা চায়। টাহা না দিলে মারে। মঙ্গলবার টাকা চাইছে, মুই টাহা দিতে রাজি না অওয়ায় মোরে মাইর‌্যা হালানোর জন্য দা হান দিয়া কোপাইয়্যা গাল ও কান কাইট্টা দেছে। মুই অ্যাইয়্যার বিচার চাই।’

জানা গেছে, পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের হানিফ হাওলাদারের মেয়ে ছকিনা। জন্মের দু’বছরের মাথায় বাবা-মাকে হারান তিনি। আলীপুরের রাখাইন সম্প্রাদায়ের মইয়্যা নামের এক পরিবারে বেড়ে উঠেন তিনি।

২০০৩ সালে মহিষডাঙ্গা গ্রামের হাবিব খানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ছকিনা দিনমজুরের কাজ করে স্বামীর সংসার চালিয়ে আসছেন। তাদের তিন সন্তান। হাবিব খান ২০০৬ সালে কক্সবাজারে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী খাদিজা বেগমকে নিয়ে থাকেন। প্রথম স্ত্রী ছকিনাকে ভরণপোষণ তো দেনই না বরং প্রায়ই তার কাছে টাকা চাইতে আসেন।

মঙ্গলবার রাতেও ছকিনার কাছে টাকা চান হাবিব। তাকে টাকা দিতে অস্বীকার করলে ছকিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন হাবিব। এতে ছকিনার বাম গাল ও কান কেটে যায়। ছকিনার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজড়া বলেন, ছকিনার মুখের বাম অংশ থেকে শুরু করে কান পর্যন্ত কেটে গেছে। আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, স্বামী হাবিব খানকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।