ডোনার না পাওয়া পর্যন্ত ব্যাগেই থাকবে সেলহার হৃদপিণ্ড

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

ব্রিটেনের বাসিন্দা সেলহা হোসেইনের শরীরে সত্যিকারের কোন হৃদপিণ্ড নেই। সেটি সবসময় থাকে তার সঙ্গের ব্যাগে। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এটাই সত্যি।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সালহা হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী যার শরীরের বাইরে একটি কৃত্রিম হৃদপিণ্ড লাগানো হয়েছে। হৃদপিণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার পর ব্রিটেনের চিকিৎসকরা তার শরীরে একটি কৃত্রিম হৃদপিণ্ড লাগিয়ে দিয়েছেন। যতদিন তিনি একজন হৃদপিণ্ডের ডোনার না পাচ্ছেন, ততদিন তাকে এটি বয়ে বেড়াতে হবে।

সালহা হোসেইন বলছেন, ‘আমার মেয়ের বয়স যখন ছয় বছর, একদিন সকালে বুকে ভয়াবহ ব্যথা শুরু হয়। সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। আমি বুঝতে পারছিলাম এটা মারাত্মক কিছু হয়েছে।’

‘দ্রুত হাসপাতালের যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানালেন, আমার হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করতে হবে। কিন্তু আমি এতটাই অসুস্থ ছিলাম, তারা আমার আমাকে একটি কৃত্রিম হৃদপিণ্ড সংযোজন করে দিতে বাধ্য হয়।’

এই বহনযোগ্য যন্ত্রটি তার শরীরের রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখে।

কিন্তু কিভাবে সেটি কাজ করে?

নানা টিউবের মধ্য দিয়ে শরীরের রক্ত এই কৃত্রিম হৃদপিণ্ড এসে পরিশোধিত হয়ে আবার টিউবের মাধ্যমে শরীরে চলে যায়। তার শরীরের ভেতরেও এ রকম প্লাস্টিকের কৃত্রিম হৃদপিণ্ড রয়েছে, যেগুলো সত্যিকারের হৃদপিণ্ডের মতোই রক্ত পাম্প করে শরীরের নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গে পাঠিয়ে দেয়।

সালহার মতো যুক্তরাজ্যে কয়েকশ’ রোগী আছেন, যারা হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু তাদের সবাই সময়মত ডোনার পান না।

২০১৬ বা ২০১৭ সালে এ রকম অপেক্ষার তালিকায় থাকা ৪০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে কৃত্রিম হৃদপিণ্ড স্থাপনের পর সালহার চিন্তাভাবনায় বড় পরিবর্তন এসেছে।

‘মৃত্যু শয্যায় শুয়ে অনেক কিছুই আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি। তার একটি হলো যেসব বিষয় নিয়ে আমরা চিন্তা করি, এই যেমন বয়লার সমস্যা, গাড়ির সমস্যা বা মানুষের সমস্যা, এগুলো আসলে কিছুই না। আমি এখন জীবনকে আরো ভালোভাবে উপলব্ধি করতে শিখেছি’- বলছেন সালহা হোসেইন।