টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উন্মাদনা উঁচুতে: প্রত্যাশা নিচুতে

লেখক:
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা। ২৪ ঘণ্টা আগে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সকাল থেকে মিরপুর শের-ই-বাংলায় গণমাধ্যমকর্মীদের আনাগোনা শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টা খানেক আগেই মিডিয়া সেন্টারের আশপাশে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।

 

কিন্তু বিসিবির দুপুর সাড়ে ১২টা যেন বাজে না। নির্ধারিত সময়ের কয়েক মিনিট আগেও সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ঢোকার অনুমতি পায়নি সংবাদকর্মীরা। প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টা দেরিতে দুপুর সোয়া ১টায় অবশেষে দল ঘোষণা করতে আসেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক ও হান্নান সরকার।

যে কোন বিশ্বকাপের আগেই দল ঘোষণা নিয়ে নানা নাটকীয়তা দেখা দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম ছিল না। মে’র শুরুতে আইসিসিতে দল পাঠিয়ে দেয় বোর্ড। প্রায় দুই সপ্তাহের মাথায় আসে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। এতদিনে দল নিয়ে চলেছে নানা কাটাছেড়া। শেষ পর্যন্ত আইসিসিতে পাঠানো দল থেকে এক পরিবর্তন এনে দল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচক।

 

জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ নিয়ে অতিরিক্ত আশা না করতে আগেই বারণ করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দলনেতার এই বক্তব্য টেনে প্রধান নির্বাচকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তাদের প্রত্যাশা কী। লিপুও শান্তর সুরে তাল মিলিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ সেমিফাইনাল খেলবে এটা বলার পর্যায়ে যায়নি।

শান্তর বক্তব্য টেনে লিপু  বলেন, ‘আমাদের দেশে ক্রিকেট নিয়ে বিশাল উন্মাদনা আছে। যখন আমরা বড় আসরে খেলিনি তখনও দেখেছি গ্যালারি ভর্তি দর্শক। ১৯৯৭ থেকে সেটা লক্ষ্য করছি। সেই উন্মাদনা এখন ব্যাপকভাবে ডালপালা মেলেছে। সেই আলোকেই হয়ত দলনায়ক এটা বলেছেন। সবাইকে এই ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছেন যেন অতিরিক্ত আশা না থাকে।’

 

‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমরা সেই পর্যায়ে এখনও যাইনি যে সেমিফাইনালে দলটাকে ধরে নিতে পারবেন। তিনি যেটা বলতে চেয়েছেন ধাপে ধাপে এগোনোর জন্য। বাস্তব শক্তির আলোকেই তিনি এই কথা বলার চেষ্টা করেছেন’-আরও যোগ করেন প্রধান নির্বাচক।

বিশ্বকাপ দল ঘোষণা নিয়ে কদিন ধরেই চলছে উন্মাদনা, কে থাকবে না থাকবে সে উৎকণ্ঠাতো আছেই। গণমাধ্যম কিংবা সামাজিকমাধ্যম; সব জায়গাতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল বিশ্বকাপ দল। শেষ মুহুর্তে তাসকিন আহমেদের ইনজুরি আরও বেশি আলোচনার জন্ম দেয়।

বিশ্বকাপের আগে উন্মাদনার পারদ অনেক উঁচুতে থাকলেও বাংলাদেশের প্রত্যাশা নিচুতেই সীমাবদ্ধ। ভারত বিশ্বকাপের আগে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন ছিল, কিন্তু ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ হিসেবে এটি লিখিত থাকবে। এবার তাই হয়তো অধিনায়ক কিংবা প্রধান নির্বাচক প্রত্যাশার লাগাম টেনে ধরে নিজেদের সীমাতে রাখতে চাইছেন।

 

তবুও নিজের গড়া এই দল থেকে কি প্রত্যাশা করেন প্রধান নির্বাচক? তার সহজ-সরল স্বীকারোক্তি, ‘আমরা আশা করি প্রথম রাউন্ড পার হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেন খেলতে পারি। তখন আবার প্রচেষ্টা থাকবে পরের ধাপে যাওয়ার।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য এসেছে ২০২২ সালে। সুপার টুয়েলভে দুই ম্যাচ জেতার কৃতিত্ব অর্জন করে। ভারতের বিপক্ষে দারুণ খেলেও শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি আইনে হারতে হয় ৫ রানে। এবার কি হবে? বলে দেবে সময়।