নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যে মেয়েরা আনন্দে ভাসিয়েছিল পুরো দেশকে, যে মেয়েদের ছাদখোলা বাসে করে বিমানবন্দর থেকে আনা হয়েছিল রাজসিক সংবর্ধনা দিয়ে, যে মেয়েদের স্বাগত জানাতে রাস্তার দুইপাশে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। মাত্র ৬ মাসের মধ্যে সেই জাতীয় নারী ফুটবল দলকে দুঃসংবাদ দিলো তাদেরই অভিভাবক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
আগামী এপ্রিলে মিয়ানমারে অলিম্পিক গেমস ফুটবলের বাছাইয়ে অংশ নেওয়ার কথা ছিল সাবিনাদের। ৩ এপ্রিল দলের ঢাকা ত্যাগের তারিখও ঠিকঠাক হয়েছিল। কিন্তু বুধবার বাফুফে ঘোষণা দিলো, টাকার অভাবে জাতীয় নারী ফুটবল দলকে অলিম্পিক বাছাইয়ে অংশ নিতে মিয়ানমার পাঠানো হচ্ছে না।
এ খবরটি যে কারোর জন্যই আকাশ থেকে পড়ার মতো। কারণ, বাফুফে কয়েকদিন আগেই জাতীয় পুরুষ ফুটবল দলকে সৌদি পাঠিয়ে অনুশীলন করিয়েছে পুঁচকে সিশেলসের বিপক্ষে সিরিজ খেলার জন্য। এত টাকা খরচ করেও লাভের লাভ হয়নি। সিশেলসের মতো ১৯৯ র্যাংকিংয়ের দলের সঙ্গে একটি ম্যাচ জয়ের পর একটি ম্যাচ হেরেছেন জামাল ভূঁইয়ারা।
অথচ যে নারী ফুটবল দল দেশের মানুষের মন জয় করেছে, সেই দলকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা থেকে বঞ্চিত করলো বাফুফে। বুধবার বাফুফের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগ যখন মেয়েদের মিয়ানমার না পাঠানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন, শুনে অনেকটাই স্তব্ধ ফুটবল অঙ্গন।
‘এই বাছাইয়ে অংশগ্রহণের জন্য যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে অংশগ্রহণকারী দেশকে। দল পাঠাতে যে পরিমাণ খরচ হবে, তা বহন করার মতো অবস্থা নেই বাফুফের। তাই আমরা জাতীয় নারী ফুটবল দলকে মিয়ানমার না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি’-এক ভিডিওবার্তায় জানিয়েছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক।
৫ থেকে ১১ এপ্রিল মিয়ানমারে বাংলাদেশের খেলার কথা ছিল ‘বি’ গ্রুপে। প্রতিপক্ষ ছিল ইরান, মালদ্বীপ ও মিয়ানমার। গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি। বাফুফে চেষ্টা করেও ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলানোর জন্য সাবিনাদের প্রতিপক্ষ ঠিক করতে পারেনি। অলিম্পিক বাছাইয়ের মধ্যে দিয়ে সাড়ে ৬ মাস পর মাঠে নামার সুযোগ ছিল মেয়েদের। বাফুফে সেই সুযোগটাও করে দিতে পারলো না দেশের ফুটবলের আলো জ্বালিয়ে রাখা সাবিনা-কৃষ্ণাদের।