জালিয়াতি মামলায় বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হাওলাদারসহ পাঁচজনকে কারাগার পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মহিবুল হাসান আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইলিয়াস আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দাড়িয়াল ইউনিয়নের বাসিন্দা নরেন্দ্র নাথ পাল ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ৬০২ শতাংশ জমির দখলে ছিলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওই জমি আত্মসাৎ করতে ২০১৫ সালে একটি জাল নিলাম ডিক্রি সৃষ্টি করেন। ২০১৬ সালে ওই জাল ডিক্রি উপস্থাপন করে জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। নরেন্দ্র পাল জানতে পারেন শহিদুল ইসলাম তার ৩ একর ৫৩ শতাংশ জমি জাল দলিল দিয়ে মালিকানা করিয়ে নেন। বাকি জমি আত্মসাৎ করতে নরেন্দ্র পালের দুই ফুফু জয়া ও গীতা পাল এবং হেমায়েত হোসেন নামে আরেকজনের নাম ব্যবহার করে একটি সাব কবলা দলিল তৈরি করেন; যা সাতক্ষীরা সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে সম্পাদন দেখানো হয়।
এছাড়া জাল পর্চা সৃষ্টি করে ২০১৬ সালে ওই জমির রেকর্ড সংশোধন করার চেষ্টা করে ভূমি অফিস থেকে ব্যর্থ হন। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন নরেন্দ্র পাল।
আদালত মামলা তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন। ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিআইডির পরিদর্শক মো. সেলিম ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ সময় আব্দুল মোতালেব নামে এক আসামি মৃত্যুবরণ করলে তার অব্যাহতি চাওয়া হয় প্রতিবেদনে। আদালত চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর মামলার ধার্য তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। তবে ২২ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ ৭ জন উচ্চ আদালত থেকে ৬ মাসের আগাম জামিন নেন। বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক নামঞ্জুর করেন। এর আগে মঙ্গলবার (০১ ফেব্রুয়ারি) মামলার অপর দুই আসামি বিনোদ বিহারী পালের মেয়ে জয়া রানী পাল ও গীতা রানী পালকে কারাগারে পাঠান আদালত।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- দাড়িয়াল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ হাওলাদার, আবুল হোসেন হাওলাদার, তহিদুল ইসলাম হাওলাদার ও সাহানুর বেগম। এই মামলায় আরও দুই আসামি পলাতক আছেন।