ময়মনসিংহের চরভিলা গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে ইয়াসীন আরাফাত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় যার অবস্থান ৫ম।
সব কিছু ঠিকই ছিল। ভর্তির সর্বশেষ ধাপ ভাইভাতে এসেই হল ঝামেলা। লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্রের সাথে হাতের লেখার মিল না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে তুলে দিল পুলিশের হাতে। ইয়াসীনের মতোই ভাইভা দিতে এসে আরো তিন শিক্ষার্থী তাদের জালিয়াতির কারণে আটক হয়েছেন। এই নিয়ে ভাইবার তিন দিনে আটক হল মোট ১২ শিক্ষার্থী। এরা সবাই প্রক্সি দিয়ে সুযোগ পেয়েছিল মেধা তালিকায়।
এ বছর প্রতি আসনের বিপরীতে লড়েছিল ১৫০ শিক্ষার্থী। তুমুল প্রতিযোগিতায় মেধার লড়াইয়ে না গিয়ে অসদুপায় বেছে নিয়েছিল অনেকেই। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন আটক হয়েছিল আরো কয়েক শিক্ষার্থী।
আজ সাক্ষাৎকার গ্রহণের শেষ দিনে আটক হয় চার শিক্ষার্থী। এর আগে রবিবার প্রথম দিন চার জন ও দ্বিতীয় দিন সোমবারও চারজন আটক হন। তাদের সবার পরীক্ষা টাকার বিনিমেয় অন্য আরেকজন দিয়ে দেওয়ায় তারা চান্স পায়।
প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, আজ ‘সি’ ইউনিটের সাক্ষাৎকারে আটক হওয়া চার শিক্ষার্থী হল, ময়মনসিংহের চরভিলা গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে ইয়াসীন আরাফাত (মেধা তালিকায় ৫ম)। গাজীপুরের শ্রীপুরের শেখ কামাল উদ্দীনের ছেলে শেখ পারভেজ আহমেদ (মেধা তালিকায় ১৫৫তম)। মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার আহমেদ আলীর ছেলে রাকিব হোসেন (মেধা তালিকায় ৫৮ তম) এবং নাটোরের লালপুর থানার আবু বক্কর সিদ্দীকের ছেলে আবু রায়হান (মেধা তালিকায় ১৩ তম)।
এর আগে সোমবার আটককৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, নীলফামারি জেলার সৈয়দপুর থানার মুন্সীপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে নিশাদ আহমেদ। সে আইন ও বিচার বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় ৪৭ তম হয়। যশোরের ঝিকরগাছা থানার বাকুড়ার আবুল কাশেমের ছেলে আশরাফুজ্জামান নয়ন ‘সি’ ইউনিটে ১৭তম স্থান লাভ করে। গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার হারুনুর রশিদের ছেলে মাহমুদুল রশিদ সৌরভ ‘ই’ ইউনিটে ১৫২তম হয়। নীলফামারি জেলার সৈয়দপুর থানার হাতিখানা গ্রামের আশেকুর রহমানের ছেলে নাঈমুর রহমান ‘ই’ ইউনিটে ১২৭তম হয়।
অন্যদিকে রবিবার আটককৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, আদমদিঘি উপজেলার তহিদুল ইসলামের ছেলে মাহবুব হোসেন। সে ‘ই’ ইউনিটে ৩য় স্থান লাভ করেন। ময়মনসিংহ জেলার সদর থানার হাফেজ আব্দুল মান্নানের ছেলে ইমাম হোসেন। তিনি ‘এফ’ ইউনিটে ৩য় স্থান লাভ করেন। ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের হারেছ মিয়ার ছেলে অমিত হাসান। সে ‘এইচ’ ইউনিটে ১১তম স্থান লাভ করে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘তারা ভর্তি জালিয়াতি করে চান্স পেয়েছে। তাই তাদেরকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। ’ আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। থানায় নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ’