ফেব্রুয়ারির পর থেকে আর মাঠে নামেননি। বল নিয়ে অনুশীলনই শুরু করেছেন তিন কয়েক আগে। একটু যেন ভয়ই কাজ করছে ব্রাজিলীয় তারকার মধ্যে।
ব্রাজিল রাশিয়ায় যাবে বিশ্বকাপে ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের মিশন নিয়ে। ফিলিপে কুতিনহোর মতো প্রতিষ্ঠিত প্লে-মেকার আছেন, আছেন গ্যাব্রিয়েল জেসুসের মতো তরুণ তারকাও। তবে ব্রাজিলিয়ানদের ‘হেক্সা’ জয়ের স্বপ্নের আবর্তন মূলত নেইমারকে ঘিরে। পায়ের চোট কাটিয়ে ওঠা নেইমার কতটা তৈরি? ব্রাজিলের স্বপ্নসারথির কথা শুনে আঁতকে উঠতেই পারেন ব্রাজিলের সমর্থকেরা! ‘আমি এখনো শতভাগ ফিট নই’-বিশ্বকাপ প্রস্তুতির লন্ডন-পর্বের জন্য রওনা হয়ে যাওয়ার আগে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে বলে গেলেন এটাই।
গত ফেব্রুয়ারিতে মার্শেইয়ের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে চোটে পড়েছিলেন নেইমার। পায়ের পঞ্চম মেটাটারশাল ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। অস্ত্রোপচারের পর পুনর্বাসনপ্রক্রিয়ার প্রথম ভাগটা ব্রাজিলেই কাটিয়েছেন। এরপর কিছুদিন তাঁর পুনর্বাসন চলেছে প্যারিসে। সেখান থেকে গ্রানজা কোমারিতে ব্রাজিল দলের অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন নেইমার। অনুশীলনশিবির শুরুর দ্বিতীয় দিন ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার বলেছিলেন, যতটা আশা করা হয়েছিল, তার চেয়ে ভালো অবস্থা নেইমারের। ব্রাজিলের তারকা ফরোয়ার্ডের পায়ের অস্ত্রোপচার করেছিলেন লাসমারই।
নেইমার তাহলে এমন বলছেন কেন? পিএসজি ফরোয়ার্ড অবশ্য শারীরিকের চেয়ে মানসিক অবস্থাটাই বেশি বোঝাতে চেয়েছেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি শতভাগ ফিট হয়ে উঠব। আমি এখনো সর্বোচ্চটা দিতে গেলে একটু ভয় পাই। তবে আমাদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হতে এখনো কিছুদিন বাকি আছে।’ ফেব্রুয়ারির পর আর মাঠে নামেননি। বল নিয়ে অনুশীলনও শুরু করেছেন দিন কয়েক আগে। তা একটু তো ভয় লাগবেই! নেইমার বললেন, ‘এই ভয়টা দূর হতে যেতে আরেকটু সময় লাগবে।’
ব্রাজিলের সমর্থকদের আবার নেইমার আশ্বস্ত করলেন এই বলে, ‘আমি অবশ্য খেলার জন্য প্রস্তুত। কোনো কিছুই আমাকে বিশ্বকাপে খেলা থেকে আটকাতে পারবে না। শারীরিকভাবে আমি সুস্থ বোধ করছি। পা ঠিক আছে। কিছু বিষয় মানিয়ে নিতে হচ্ছে। কিছুটা অস্বস্তি রয়েছে। তবে এটা আমার বিশ্বকাপে খেলা ঠেকাতে পারবে না।’
আগামী ৩ জুন অ্যানফিল্ডে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। এরপর ভিয়েনায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আরেকটি প্রীতি ম্যাচ। বিশ্বকাপ শুরুর আগে এ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচই খেলবে ব্রাজিল। তবে এই দুই ম্যাচে নেইমার খেলবেন কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। লাসমার অবশ্য আশাবাদী, গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই নেইমারকে পাবে ব্রাজিল, ‘অনুশীলনের প্রথম সপ্তাহে নেইমার খুবই স্বাভাবিক ছিল, সে প্রথম ম্যাচ থেকেই মাঠে থাকবে বলে আশা করি।’
দেশের মাটিতে গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে পিঠের চোট নিয়ে শেষ হয়েছিল নেইমারের বিশ্বকাপ অভিযান। পরে শেষ চারে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে উড়িয়ে গিয়ে ভেঙেছে ব্রাজিলের শিরোপা-স্বপ্ন। এবার আর অমন দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপ চান না নেইমার, ‘আরেকটি বিশ্বকাপ খেলা আমার স্বপ্ন। আশা করছি আমার এই স্বপ্নপূরণে কোনো কিছুই বাধা হবে না।’
আসলে কী হবে, সেটা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।