বাণিজ্যযুদ্ধকে ‘স্টুপিড’ বললেন আলিবাবা গ্রুপের নির্বাহী চেয়ারম্যান জ্যাক মা। গতকাল সোমবার চীনের সাংহাইয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, চীনের সাংহাইয়ে সোমবার এক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেন জ্যাক মা। তিনি বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে অর্থহীন বিষয়। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেকুব যুদ্ধ হচ্ছে বাণিজ্যযুদ্ধ। বাণিজ্যের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ ও শান্তি বৃদ্ধি করা, পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি নয়। তিনি বলেন, আসল কথা হলো, কেউ প্রকৃত পক্ষে মুক্তবাণিজ্য আটকাতে পারে না।
কয়েক মাস ধরে চলছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য বাণিজ্যযুদ্ধ। দেশ দুটি একে অপরের বিভিন্ন পণ্যের ওপর বেশি বেশি করে শুল্ক আরোপ করেছে। কেউ কাউকে ছাড় দেয়নি। তবে বাণিজ্যযুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইতিমধ্যে দেশ দুটি নতুন করে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য চুক্তি করতে প্রস্তুত। অন্যদিকে চীনের তরফ থেকেও দেওয়া হয় সবুজসংকেত। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শিগগিরই চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের অবসান ঘটছে।
সেপ্টেম্বরে চীনের পণ্যের ওপর নতুন করে ২০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর আলিবাবার জ্যাক মা বলেছিলেন, বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তারে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দুই দেশের বাণিজ্য লড়াই ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনকালের পরও চলতে পারে। এটা ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলবে। দুই দেশের নাগরিকদের অনুমানের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি ও বৃহত্তর প্রভাব ফেলবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন জ্যাক মা। তিনি মনে করেন, এই বিরোধের মোকাবিলা করতে চীনকে তার অর্থনীতি শক্তিশালী করতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকার সঙ্গে বাণিজ্যের ওপর জোর দিতে হবে।
জ্যাক মা বলেন, স্বল্প মেয়াদে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ বিপদে পড়বে। এটা অনেক দিন ধরে চলবে। স্বল্পমেয়াদি সমাধান চাইলে হবে না, এমন সমাধান নেই। আপাতদৃষ্টিতে এ সংকটের কোনো সমাধান দিতে না পারলেও জ্যাক মা এটিকে সুযোগ হিসেবেই দেখছেন। তিনি বলেন, বাণিজ্যের ওপর এই আঘাত বিভিন্ন কোম্পানির জন্য সুযোগ হয়ে উঠবে এবং তারা সেসব কাজেও লাগাতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের শুধু সামনের তিন মাস বা তার পরের তিন মাস নিয়ে ভাবলে হবে না। এটা একটা বিরাট সুযোগ। যদি আলিবাবা এখন টিকে থেকে আরও বড় হয়ে উঠতে না পারে, তাহলে চীনের কোনো প্রতিষ্ঠান পারবে না।’