খাগড়াছড়িতে বন্যায় তলিয়ে গেছে ঈদ আনন্দ

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

চার দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। এখনও স্বাভাবিক হয়নি খাগড়াছড়ির বন্যা পরিস্থিতি। বৃষ্টি থামলেও আকাশে কালো মেঘ জমে থাকায় শঙ্কা কাটেনি পাহাড়ের মানুষের। এখনও পানির নিচে তলিয়ে আছে খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা ও মহালছড়ির নিমাঞ্চল। সর্বত্রই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বন্যার ক্ষত চিহ্ন।

খাগড়াছড়ির স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা আর পাহাড়ি ঢলে মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর পরিণত হয়েছে বেদনার উৎসবে। সর্বত্রই ভয়াবহ বন্যার বিধ্বস্থ ছাপ। বন্যায় হারিয়েছে ঘর-বাড়ি, নষ্ট হয়েছে জমির ফসল। দুর্গত এলাকাগুলোতে শুধুই হাহাকার। বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে নেই উৎসবের আমেজ। সকলের মাঝে হারানোর ছাপ।

ঈদের একদিন বাকি থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ভাগ্যে কি আছে তাও তাদের অজানা। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ঈদের বায়না করলেও অভিভাবকরা যেন নিরুপায়। হতাশায় রাত কাটে এসব পরিবারের মানুষগুলোর। এদিকে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের মাঝে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ করলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন দুর্গতরা।

মেরুংয়ের অধিকাংশ গ্রাম এখনও প্লাবিত আছে জানিয়ে মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রহমান কবির রতন বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় দীঘিনালায় ঈদ আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে। কোথাও উৎসবের আমেজ নেই। পানিবন্দি আছে সাত হাজারেরও বেশি মানষ। বন্যার পানি নামতে আরও ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে খাগড়াছড়ি সদরের শান্তিনগর, বাঙ্গালকাঠি, চেঙ্গীব্রিজ এলাকা, সবুজবাগ, গঞ্জপাড়া, মুসলিমপাড়া ও শব্দ মিয়া পাড়া ঘুরে দেখা মিলেছে একই চিত্র। সর্বত্রই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। রাত পোহালেই ঈদ-উল-ফিতর তা জানলেও ঈদের কোনো অনুভূতি নেই এসব দুর্গত মানুষগুলোর মধ্যে।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহ আলম বলেন, অতীতে এতো বড় বন্যার মুখোমুখি হয়নি খাগড়াছড়ির মানুষ। মাত্র একদিন পরে মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর হলেও এখনও সৃষ্ট বন্যার ক্ষত শুকায়নি। এখনও তার ওয়ার্ডের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলেও জানান তিনি। তার মতে ধনী-গরিব সবাইকে নিঃস্ব করে দিয়েছে সাম্প্রতিক বন্যা। বন্যার কারণে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাহাড়ের মানুষ।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মো. শহীদুল ইসলাম জানান, দীঘিনালার প্রায় সাত থেকে দশ হাজার মানুষ পানিবন্দি। এদের মধ্যে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। ঈদেও আমেজ হারিয়ে ফেলেছে দীঘিনালার নিঃস্ব মানুষগুলো।