২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১০টি প্রান্তিক পরিবারকে স্বাবলম্বী করার
লক্ষ্যে পুনর্বাসন সহায়তা দিয়েছে জলবায়ু সুবিচার ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা
সংগঠন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের
ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝে জেগে ওঠা চর ইয়ুথনেটে ৪র্থ দফায় ২ টি পরিবারের
মাঝে গরু, ৪টি পরিবারে ছাগল ও ভেড়া, ২টি পরিবারকে দোকান ঘর ও দোকানের
মালামাল এবং ২টি পরিবারকে খামারের জন্য হাঁস-মুরগি বিতরণ করা হয়।
উপকারভোগী করিমুন বেগম বলেন, ‘আমার ছোট ছোট দুইটা বাচ্চা। স্বামীটা
প্রতিবন্ধী, কথা বলতে পারে না। অভাবের সংসারে কষ্ট করে চলতে হয়। আমি এই
গরুটা পেয়ে খুব খুশি।’
আরেক উপকারভোগী আনোয়ারা বলেন, ‘অভাবের সংসারে আমরা যারা চরে থাকি খুব
কষ্টে থাকি। ছাগলটা পেয়ে আমার সংসারে কিছুটা কষ্ট দুর হবে।’
ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমে এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন,
ইয়ুথনেট’র নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, ইভেন্ট ও প্রোগ্রাম সমন্বয়ক
এস জেড অপু, রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক মারুফ হাসান, কুড়িগ্রাম জেলা টিমের
সমন্বয়ক সুজন মোহন্ত ও যাত্রাপুরের ইউপি সদস্য রহিম উদ্দিন হায়দার রিপন
প্রমুখ।
ইয়ুথনেট এর নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে আমরা
জলবায়ুতে ক্ষতিগ্রস্থদের অধিকার নিয়ে কাজ করছি। আমরা ইতিপূর্বে উপকূল,
হাওর ও পাহাড় অঞ্চলে কাজ করে দেখেছি সেখানকার পরিবেশের থেকে সব থেকে বেশি
কষ্টে আছেন কুড়িগ্রামের মানুষ। আমরা জলবায়ুর সুবিচারের পাশাপাশি এ
অঞ্চলের চরবাসী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ শুরু করেছি। আশাকরি চর
উন্নয়ন প্রকল্পে আমরা এই চরটিকে মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে পারবো।
সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে চরবাসী প্রান্তিক মানুষের
টেকসই উন্নয়ন সম্ভব। ’
ইয়ুথনেট সংগঠনটির কুড়িগ্রাম জেলা টিমের সমন্বয়ক সুজন মোহন্ত বলেন,
‘আমাদের জেলায় ৪২১ টি চর-দ্বীপচর রয়েছে। প্রতিটি চরে কম-বেশি একই সমস্যা।
আমরা এই চরটিকে বেছে নিয়ে ৪র্থ বারের মতো চরের মানুষদের আত্মকর্মসংস্থান
সৃষ্টিতে কাজ করছি।’
বার বার বানের জল আঘাত হানে এখানে। দারিদ্রতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে
বেড়ে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ চরের মানুষের নিত্যসঙ্গী। গত বছরের
বন্যা পরবর্তী সময়েও চরবাসী মানুষের পাশে ছিল ইয়ুথনেট। এসময় চরবাসীর
দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ও যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় ব্রহ্মপুত্রের
বুকে জেগে ওঠা এ চরের নামটি যুব সংগঠনের নামে ‘চর ইয়ুথনেট’ হিসেবে ঘোষণা
দেন যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল গফুর। তিনি বলেন,
আমরা যারা চরাঞ্চলে বসবাস করি আমাদের প্রতিদিন সংগ্রাম করে টিকে থাকতে
হয়। বন্যা, শীত, খরা সবসময় আমাদের প্রকৃতির সাথে লড়াই করে জীবিকা নির্বাহ
করতে হয়। নতুন এই জেগে ওঠা চরটি নতুন নাম পেয়ে আমরা খুবই খুশি।