উত্তর কোরিয়া সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের জন্য তার পছন্দের দুই ডজন ঘোড়া পাঠিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিষয়টিকে দুই নেতার মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার সর্বশেষ লক্ষণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। ঘোড়াগুলো মূলত আমদানি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাশিয়ার কৃষি নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা রোসেলখোজনাদজরের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ এ তথ্য জানিয়েছে।
রাশিয়ার সুদূর প্রাচ্য অঞ্চলের প্রিমোরস্কি ক্রাই পশু চিকিৎসা কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, সীমান্তবর্তী শহর খাসান দিয়ে দুটি রেলগাড়িতে ২৪টি ঘোড়া উত্তর কোরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ১৯টি স্ট্যালিয়ন জাতের এবং পাঁচটি অরলভ ট্রটার জাতের। এগুলো কিমের প্রিয় ঘোড়া হিসাবে পরিচিত।
এর আগে ২০২২ সালে অরলভ ট্রটার জাতের ৩০টি ঘোড়া পিয়ংইয়ংয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিমের শাসনের প্রচারমূলক চিত্রগুলোতে তাকে মাঝে মাঝেই ঘোড়ায় চড়তে দেখা গেছে।
অরলভ ট্রটার রাশিয়ার সর্বাধিক উদযাপিত জাতের ঘোড়া। এরা গতি, শক্তি ও ধৈর্যের জন্য পরিচিত। ১৯ শতকের অভিজাতরা এসব ঘোড়া ব্যবহার করতেন বেশি।
দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইউক্রেনে আগ্রাসনে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ায় পাঠানো উত্তর কোরিয়ার আর্টিলারি শেলের আংশিক অর্থ প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, সামরিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি ‘সমন্বিত অংশীদারিত্ব চুক্তি’ সই করার পর গত জুনে পুতিনকে এক জোড়া পুংসান কুকুর পাঠিয়েছিলেন কিম। এরপর আগস্টে কিমকে ৪৪৭টি ছাগল উপহার দেন শীর্ষ রুশ নেতা।
পারমাণবিক অস্ত্র এবং বালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিকাশ সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া অশ্বারোহী সামরিক ইউনিটগুলোর একটি নেটওয়ার্কে কয়েক হাজার ডলার ঢালছে। এটি প্রাচীনতম সামরিক কৌশলের মধ্যে একটি।
২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রাশিয়া থেকে ঘোড়া আমদানি করতে দেশটি কমপক্ষে ৬ লাখ ডলার ব্যয় করেছে। কিমকে তার দেশের মিরিম হর্স রাইডিং ক্লাবের জাদুঘরে ৩৮৬ বার অশ্বারোহণ করতে দেখা গেছে।
ক্লাবটিতে কিমের অশ্বারোহণ সম্পর্কিত উক্তিও রয়েছে। যেমন- ‘ঘোড়াগুলো এখন আর যুদ্ধে ব্যবহৃত হয় না, তবে যুদ্ধের জন্য ঘোড়া গুরুত্বপূর্ণ, কেননা তারা সামরিক বাহিনীর মাহাত্ম্য প্রদর্শন করে।’ আরেকটিতে লেখা আছে, ‘কমান্ডারদের অবশ্যই ঘোড়ায় চড়তে হবে। যে ব্যক্তি ঘোড়ায় চড়ে সে একটি শক্তিশালী স্বভাব এবং উচ্চতর কমান্ড ক্ষমতা অর্জনে সক্ষম, যা শারীরিক শক্তির সঙ্গেও সম্পর্কিত।’