‘চান্দের হাসি লাগে ভালো জোসনা পরবাসে, ললিতা কয় যাব আমি যাব চান্দের দেশে’— এমন কথার গানটি আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্তু অন্তরালেই থেকে যান এ গানের গায়িকা সুমি শবনম।
বিশেষ আয়োজনএ অতিথি হিসেবে হাজির হন সুমি শবনম।
এ আলাপচারিতায় সুমি শবনম জানান, তার সুরের ভুবনে আসার পথটি মোটেও মসৃণ ছিল না। অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাকে। এমনকি গায়ের রং কালো বলে স্টেজ থেকেও নামিয়ে দিয়েছিল আয়োজকরা।
রাইজিংবিডি স্পেশালে সুমি শবনম বলেন, ‘‘আমি একটা শোতে গিয়েছিলাম। খুব মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব একজনের শোতে। উনি যখন আমার সামনে আসেন, তখন উনি আমাকে পাঠিয়ে দেন। সরাসরি বলেন, ‘এই শিল্পী চলবে না।’ আমি কালো বলে স্টেজে গান করতে পারিনি৷ অসংখ্যবার আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে৷’’
ভারতে গিয়েও এমন খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে সুমি শবনমের। সেই ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘একবার ইন্ডিয়াতে কাজ করতে গিয়েছি। আমি গাড়িতে উঠব কিন্তু তখন আর উঠতে দেয়নি। সরাসরি বলেন, কালো মেয়ে আমার গাড়িতে উঠবে না। এ ব্যবহার বাংলাদেশের একজন আমার সঙ্গে করেছিলেন।’
মানুষের এসব আচরণে ভেঙে পড়েছিলেন সুমি শবনম। সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করে এই গায়িকা বলেন, ‘এরপর মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ি। একা হয়ে যাই। ঘরকুনো হয়ে যাই। সিদ্ধান্ত নেই আমি আর গানই করব না। ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম। আমার বর আমাকে আবার মিডিয়ার সামনে নিয়ে আসেন।’
বর্তমান সময়ে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন বলে, এই শিল্পীতো ১৮ বছল ধরে নেই। বয়স হয়ে গিয়েছে।’
এসব কারণে মিডিয়া থেকে অনেকটাই দূরে চলে যান সুমি শবনম। সম্প্রতি তার গাওয়া ‘ছেলে তোর কোঁকড়া কোঁকড়া চুলে যেন সমুদ্র ঢেউ খেলে, সেই ঢেউ খেলা দেখিতে আমার ভাল্লাগে’সহ কয়েকটি গান ভাইরাল হয়৷ এছাড়াও কয়েকটি নতুন গান প্রস্তুত আছে। খুব শিগগির মুক্তি পাবে বলে জানান সুমি।
২০০১ সালে অডিও বাজারে প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ হয় সুমি শবনমের। অ্যালবাম থেকে ‘কালো চশমা’ শিরোনামের গানটির মাধ্যমে শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে সংগীত নিয়ে এগিয়ে চলা তার। ২০০৯ সালে একটি নাটকে ‘ললিতা’ শিরোনামে গান গেয়ে সংগীতশিল্পী হিসেবে আলোচনায় উঠে আসেন সুমি শবনম।