নয় ঘণ্টা আগেও মরিয়ম লিখেছিল
আমি বিশ্বাস করি
আমি আমার মাকে ফিরে পাব।
দু-ঘণ্টা আগে মরিয়ম লিখেছে
আমি আমার মাকে খুঁজে পেয়েছি
যে বা যারা আমার মাকে ফিরিয়ে দিলেন
তাদের কাছে
আমাদের যার পর নাই ঋণ
তারা গত তেইশ লক্ষ বত্রিশ হাজার আট শত সেকেন্ড
আটত্রিশ হাজার আটশত আশি মিনিট
ছয়শত আটচল্লিশ ঘণ্টা
ছাব্বিশটি অমাবশ্যাঘন রাত
সাতাশটি অন্ধকারে ঢাকা দিন
আমার মাকে
আগলে রেখেছিল
তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই
মা আমার নাম রেখেছিল মরিয়ম
ঈশ্বররে মায়ের নামে নাম
মা ভাবতেন
আমিই তো সব
সমস্ত বিশ্ব চরাচর
সমস্ত স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষার
গোল চত্বর
মা গো
কত যে তোমারে ডাকলাম
কত যে খুঁজলাম
আদাড়ে বাদাড়ে পথে
নদী নালা আকাশ নক্ষত্র তাবিজ
কোন তদবির
বাদ দেই নাই
মাগো বলো
ওরা তোমারে কষ্ট দেয় নাই
তুমি কি ভাত খাইছিলা এতগুলো দিন
ওমা কথা বলো
মা আমার বড় অভিমানী
তৃষ্ণার্ত সন্তানের মুখে দিতে চেয়েছিল
পানি
সরল সুন্দর নিবারন
কেন চলে গেলে মাগো
ওরা কি জানত তোমার নাম
তুমি যে ফাতিমা জননী
থানা পুলিশ সংবাদ
দৌলতপুর থেকে দৌলতদিয়া ঘাট
মানববন্ধন
কত কত পথ
কত যে হাঁটলাম
মাগো
তাহলে ওরা রক্তখেগো বাগদাশ
ওদের কি গা ভরা ছুরি
ওদের কানে কি পৌঁছাবেনা কোনোদিন
তোমার কর্তিত ফুল
তোমার সন্তান
তোমার মানচিত্রের তীব্র আহাজারি
কিচ্ছু জানি না
মা
মাগো মা
তোমারে কি আর কোনদিন
ডাকতে পাব না
আর কোনোদিন তোমারে কি দেখতে পার না
ওমা
জননী জন্মভূমি স্বর্গাদপী গরিয়সী
এসব কি সত্যি বাণী মা
তোমার চোখের নিচে কালশিটে দাগ
খুবলে খাওয়া হাত
সন্ত্রস্থ সম্ভ্রম
ওরা কি ভয়াবহ যমদূত জঘন্য হাঙর
কামড়ে কামড়ে কাফন
কামড়ে কামড়ে কর্পূর
কামড়ে কামড়ে শালদুধ
সব খায় মাগো
ওমা মা
তোমাকে তবে কি আর
কোনোদিন ডাকতে পাবনা
ফেসবুকে লিখে দিছি
তোমাকে পাবার সংবাদ
সাতাশ দিন পর
বন্ধু স্বজন দেশবাসী
আইনের সহযোগিতায়
খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছি
আমার মায়ের মৃতদেহ।
বি.দ্র.- এটা কোনো কবিতা নয়।
মা হারা মরিয়মের বুকের বেদনা।
ইতি-
সাকিরা পারভীন