যার একবার হয়েছে সেই জানে উকুনের কষ্ট। তাই সবাই এ থেকে জ্বালা থেকে সবাই মুক্তি পেতে চায়। তবু কি মুক্তি পাওয়া যায়? যে কোনও সময়, যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে এই সমস্যার। পরিবারের এক জনের হয়েছে তো অল্প সময়েই ছড়িয়ে পরতে পারে পরিবারের বাকি সদস্যদের মধ্যে। আর এমনটা হলে সারা মাথা চুলকাতে চুলকাতে জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠতে যে সময় লাগে না, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! চলুন জেনে নেওয়া যাক উকুন সমস্যার ঘরোয়া সমাধানগুলো কী কী…
টি ট্রি অয়েল: এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান নিমেষে উকুনকে মেরে ফেলে। সেই সঙ্গে উকুনের ডিমকেও ধ্বংস করে। ফলে পুনরায় এমন সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। এক্ষেত্রে রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে পরিমাণ মতো টি-ট্রি অয়েল নিয়ে স্কাল্পে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। তারপর একটা টাওয়াল বালিশের উপর রেখে শুয়ে পরতে হবে। পরদিন ঘুম থেকে উঠে ভাল করে চুলটা আঁচড়ে নিলেই দেখবেন কেল্লাফতে!
নিম তেল: এতে উপস্থিত অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ নিমেষে উকুনকে মেরে ফেলে। সেই সঙ্গে ডিমকেও ধ্বংস করে। সেই সঙ্গে স্কাল্পের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো নানাবিধ ত্বকের রোগের চিকিৎসায় এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নিম তালকে কাজে লাগানো হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কয়েক ফোঁটা নিম তেলের সঙ্গে পরিমাণ মতো শ্যাম্পু মিশিয়ে বারে বারে চুল ধুতে হবে। সেই সঙ্গে চুল ধোয়ার পর প্রতিদিন চুল আঁচড়াতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে।
অলিভ অয়েল: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত যদি অল্প পরিমাণ অলিভ অয়েল নিয়ে চুলে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করা যায়, তাহলে উকুনের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। কারণ এই তেলটির অন্দরে উপস্থিত বেশ কিছু উপাদান নিমেষে উকুনদের মেরে ফেলে। ফলে সমস্যা কমতে সময় লাগে না।
নারকেল তেল: অলিভ অয়েলের মতো নারকেল তেলও চুলকে পিচ্ছিল করে তোলে। ফলে চুলের ফাঁকে ফাঁকে জায়গা করে নেওয়া উকুনেরা ঝরতে শুরু করে। সেই সঙ্গে উকুনের ডিমও ঝরে যায়। ফলে এমন ধরনের ত্বকের রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো নারকেল তেল নিয়ে তা গরম করে ধীরে ধীরে স্কাল্পে লাগাতে হবে। তারপর ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফলতে হবে চুলটা। এমনটা প্রতিদিন করলে দেখবেন উকুনেরা মরতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে পুনরায় এমন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যাবে কমে।
মাউথ ওয়াশ: একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধু! বাস্তবিকই উকুনের প্রকোপ কমাতে মাউথ ওয়াশ দারুনভাবে কাজে আসে। আসলে এই তরলটির অন্দরে উপস্থিত ইউক্যালিপটাস অয়েল এবং থায়ামল, অল্প সময়ে উকুনদের মেরে ফেলে। ফলে সমস্যা কমতে সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল এই রোগের চিকিৎসায় কীভাবে কাজে লাগাতে হবে মাউথ ওয়াশকে। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে মাউথ ওয়াশ নিয়ে ভাল করে স্কাল্পে লাগিয়ে একটা টাওয়াল দিয়ে চুলটা বেঁধে নিতে হবে। এরপর ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফলতে হবে চুলটা। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে এক বার করে এই ঘরোয়া টোটকাটিকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলেই দেখবেন আর কখনও উকুন ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।
আলোচিত ঘরোয়া উপায়গুলিকে কাজে লাগালে যে শুধু উকুনের প্রকোপ কমে, তা নয়, সেই সঙ্গে চুল এবং স্কাল্পের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করে। তাই তো বলি যদি অপূর্ব সুন্দর চুলের অধিকারী যদি হতে চান, তাহলে এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলিকে কাজে লাগিয়ে নিয়মিত চুলের পরিচর্যা করতে ভুলবেন না যেন!