ইরানে সামরিক কুচকাওয়াজে হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আভাজ শহরে সামরিক কুচকাওয়াজে বন্দুকধারীরা এই হামলা চালায়। হামলায় বেসামরিক মানুষও নিহত হয়েছেন। ইরান-ইরাক যুদ্ধের বার্ষিকী উদ্যাপনের দিন এই হামলার ঘটনা ঘটল।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সির (আইআরএনএ) বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আইআরএনএ নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২৪ জন বলে নিশ্চিত করেছে। ইরানের এই সংবাদমাধ্যমটির দাবি, সৌদি আরব সংশ্লিষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-আহভাজ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। বলা হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হামলার দায় স্বীকার করে বক্তব্য দিয়েছে আল-আহভাজ।
ইরানের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, হামলাকারীরা কুচকাওয়াজস্থলের অদূরে একটি পার্কে অবস্থান করছিল। তারা সামরিক পোশাকে ছিল। স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় কুচকাওয়াজ শুরু হলে তারা গুলি চালায়। হামলাকারী ছিল মোট ৪ জন। হামলায় ২৪ জন নিহত ও ৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, হতাহতদের মধ্যে সামরিক কুচকাওয়াজ দেখতে আসা অনেক নারী ও শিশুও রয়েছেন।
এই হামলার জন্য সুন্নিপন্থী জঙ্গি বা আরব জাতীয়তাবাদীদের দায়ী করছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেছেন, বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের সহায়তায় সন্ত্রাসীরা ইরানের ওপর হামলা চালিয়েছে। এদিকে খুজেস্তান প্রদেশের গভর্নর গোলাম-রেজা শরিয়াতি বলেছেন, এই হামলায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ হতাহত হয়নি। হামলাকারীদের প্রতিহত করা হয়েছে। তাদের দুজনকে হত্যা ও আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের একজন আহত।
এদিকে শনিবারই রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘সাদ্দাম হোসেনের মতো ভাগ্যবরণ করে নিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।’ রুহানি আরও বলেছেন, ইরান প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র প্রত্যাহার করবে না। এমনকি যেসব ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আমেরিকার ক্ষোভ আছে, সেগুলোও নয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে থাকা পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় এবং গত মাসে দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরিপ্রেক্ষিতে হাসান রুহানি এই মন্তব্য করলেন। এবার সামরিক কুচকাওয়াজে বন্দুকধারীর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরব ও এর মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরানের মনোভাব আরও আক্রমণাত্মক হবে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।