ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার আগে এবং পড়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে ন্যাটো (উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট)। গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। এরপর থেকেই টানা সংঘাত চলছে। ইউক্রেন আর রাশিয়ার সংঘাতে কেন বার বার ন্যাটোর নাম আসছে? এই সংঘাতের পেছনেই বা কারণ কী?
সম্প্রতি ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। মূলত এ নিয়েই আপত্তি রাশিয়ার। ইউক্রেনে হামলার ঘটনাও মূলত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই। রাশিয়া চায় না তার প্রতিবেশী দেশগুলোতে ন্যাটোর প্রভাব বাড়ুক। কারণ এর ফলে তারা নিরাপত্তা শঙ্কায় পড়ে যাবে। ইউক্রেন যেন ন্যাটোর অন্তর্ভূক্ত হতে না পারে সেজন্যই হয়তো আগেভাগেই দেশটিতে আক্রমণ করে বসেন পুতিন।
ন্যাটোর প্রতিষ্ঠা ও উদ্দেশ্য
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ মোট ১২টি দেশ নিয়ে গঠিত হয় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বড় এই সামরিক জোট। সম্প্রতি ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বসনিয়া, জর্জিয়া, ইউক্রেন ও হার্জেগোভিনা। ন্যাটোর বর্তমান সদর দপ্তর বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে। তবে পূর্বে এর সদর দপ্তর ছিলো ফ্রান্সের প্যারিসে।
একে অপরকে সামরিক সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার নিয়েই এই জোটের যাত্রা শুরু। ন্যাটোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, তাদের কোনো সদস্য দেশের ওপর কোনো দেশ হামলা চালালে তা প্রতিরোধে জোটের অন্যান্য দেশ সব ধরনের সামরিক সহায়তা দেবে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং বর্তমান রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই এই সামরিক জোটের মূল উদ্দেশ্য ছিল।
সদস্য দেশ
ন্যাটোর বর্তমান সদস্য দেশ ৩০টি। এগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আলবেনিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, কানাডা, ক্রোয়েশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মন্টিনেগ্রো, নেদারল্যান্ডস, নর্থ মেসিডোনিয়া, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন এবং তুরস্ক। ২০২০ সালে নর্থ ম্যাসোডোনিয়া সর্বশেষ দেশ হিসেবে ন্যাটোতে যোগ দেয়।
রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর চুক্তি
স্নায়ুযুদ্ধের শেষের দিকে রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর মৌখিক চুক্তি হয়েছিল যে, তারা ইউরোপের পূর্বদিকে তাদের প্রভাব আর বিস্তার করবে না। কিন্তু ন্যাটো এখন এর বিপরীত দিকে হাঁটছে। বর্তমানে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের বেশিরভাগ দেশেই ন্যাটোর প্রভাব বেড়েছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকেই এ ক্ষেত্রে বড় কারণ হিসেবে মনে করা হয়। আর ন্যাটোর প্রভাব বাড়তে থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষীপ্ত রাশিয়া। প্রতিবেশী দেশগুলোতে ন্যাটোর প্রভাব বাড়তে থাকায় ইউক্রেনে যুদ্ধের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া।
ইউক্রেনে হামলার আগে রাশিয়ার দাবি ছিল প্রতিবেশী ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না। পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সব ধরনের সামরিক সম্প্রসারণ বন্ধ রাখার দাবি জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি অভিযোগ তোলেন যে, ন্যাটো পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
সে সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, তার দেশ ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা কখনোই ত্যাগ করবে না। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়টি ইউক্রেনের জন্য বাঁচা-মরা এবং স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন এবং এটি কেবল একটি আকাঙ্ক্ষা নয়, তার দেশের জন্য জরুরি পদক্ষেপ।
ন্যাটোর ওপর আস্থা নেই রাশিয়ার
রাশিয়া শুরু থেকেই ন্যাটো কে বিশ্বাস করে না। তাদের আশঙ্কা প্রতিবেশী দেশগুলোতে শক্তি বাড়িয়ে মূলত রাশিয়াকে চাপে রাখতে চায় এই সামরিক জোট। অপরদিকে ইউক্রেনের প্রতিও রাশিয়ার বিশ্বাস নেই। কারণ, ২০১৪ সালের শুরুর দিকে দেশটিতে রুশপন্থী প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এর জবাবে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে একীভূত করে রাশিয়া। পূর্ব ইউক্রেনের সশস্ত্র রুশপন্থীদেরও সমর্থন দিয়ে আসছে মস্কো। ন্যাটো এ ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ না করলেও প্রথমবারের মতো তখন বেশ কয়েকটি পূর্ব ইউরোপীয় দেশে সেনা মোতায়েন করে।
১৯৯২ সালে বসনিয়া যুদ্ধের মাধ্যমে ন্যাটো প্রথম কোনো সামরিক অভিযানে অংশ নেয়। এরপর ১৯৯৯ সালে কসোভো যুদ্ধে বিমান বাহিনীর মাধ্যমে দ্বিতীয় অভিযানে নামে তারা। আর তৃতীয় অভিযান শুরু করে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে।
প্রতিষ্ঠার প্রথম দুই বছর ন্যাটো একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে ছিল, কিন্ত কোরীয় যুদ্ধের পর ন্যাটোর সদস্যরা চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ দুই সামরিক কমান্ডারের অধীনে একটি সমন্বিত সামরিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার আগে ন্যাটোর কাছে প্রতিশ্রুতি চেয়েছিল যে, তারা ইউক্রেন, জর্জিয়া বা অন্য কোনো দেশকে নতুন করে সদস্য করবে না। কিন্তু ন্যাটো সে সময় জানায় যে, কারা নিরাপত্তা জোটে যোগ দেবে সে বিষয়ে প্রতিটি দেশের নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত। ন্যাটো ইউক্রেনকে তাদের সদস্য করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই হয়তো পুতিন দেশটিতে হামলার আগে দ্বিতীয়বার ভাবেননি।
ইউক্রেনে হামলা এবং পুতিনের ভুল চাল
ইউক্রেন এবং রাশিয়ার বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়ার এই অভিযান পুরোপুরি পরিকল্পনামাফিক এগোচ্ছে না। শুরু থেকেই পুতিন বলে আসছিলেন, ইউক্রেন কোনো স্বাধীন দেশ নয়, এটি রাশিয়ারই অংশ। এই চিন্তাটাই তার ভুল ছিল। দেশটি যে স্বাধীন এবং এর জনগণ যে তাদের দেশ রক্ষায় সবটুকু সামর্থ্য দিয়ে এগিয়ে আসবে সেটা হয়তো তিনি ভাবতেও পারেননি। ইতোমধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে বিভিন্ন দেশ থেকে স্বদেশে ফিরেছেন ৮০ হাজার ইউক্রেনীয়।
অপরদিকে পশ্চিমা বিশ্বের আধিপত্যের কথাও হয়তো পুতিনের মাথায় ছিল না। একের পর এক দেশ এখন রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা কোসঠাসা হয়ে পড়েছে রাশিয়া। বৈশ্বিক ব্যাংকিং পেমেন্ট সিস্টেম সুইফট থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে দেশটিকে। এছাড়া রুবলের (রাশিয়ার মুদ্রা) মূল্যহ্রাস এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি মোকাবিলায় সুদের হার সাড়ে ৯ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং, বৃহত্তম প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল, বহুজাতিক কোম্পানি নাইকিসহ অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বা দেশটির সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন দেশের আকাশসীমা ব্যবহারেও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। এসব ঘটনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না রাশিয়া।
এছাড়া ইউক্রেনের প্রতিবেশী ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ইতোমধ্যেই এই যুদ্ধে দেশটিকে সহায়তায় এগিয়ে এসেছে। অনেক দেশই সেনা এবং সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। টানা ৮ দিনের সংঘাতে রাশিয়ার খুব বড় কোনো অর্জন দেখা যাচ্ছে না। সব শক্তি দিয়ে তাদের প্রতিরোধ করছে ইউক্রেন। হামলা চালিয়ে পুতিন এখন বেকায়দায় পড়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয় তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে রাশিয়া?
পশ্চিমা দেশগুলোর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই রাশিয়ার পারমাণবিক বাহিনীতে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছেন পুতিন। তার এমন নির্দেশে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, ওই নির্দেশের মধ্য দিয়ে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে এমন ইঙ্গিত দেওয়ার বদলে তিনি হয়ত আসলে বিশ্বের অন্য দেশগুলোকে এক ধরনের বার্তা দেয়ার চেষ্টা করেছেন যে, তারা যেন ইউক্রেন ইস্যুতে বেশি তৎপরতা না দেখায়।
পৃথিবীতে প্রায় ৮০ বছর ধরেই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে এবং একে এক ধরণের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হয়। অর্থাৎ এটি বিভিন্ন রাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা হিসেবে কাজ করে। পারমাণবিক অস্ত্রের হিসাবের পুরোটাই এখনো অনুমানভিত্তিক। কিন্তু ফেডারেশন ফর আমেরিকান সায়েন্টিস্ট বলছে, রাশিয়ার ৫ হাজার ৯৭৭টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড আছে।
এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার ওয়ারহেডের মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং সেগুলো বাতিল করে দেওয়ার কথা। বাকি সাড়ে চার হাজার কিংবা তার চেয়ে কিছু বেশি সংখ্যক ওয়ারহেডের মধ্যে বেশিরভাগ কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র- ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট, যা দূরপাল্লার হামলা চালাতে সক্ষম। এগুলো সাধারণত পারমাণবিক যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত অস্ত্র।
বাকি অস্ত্রগুলো ছোট বা কম বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্র যা স্বল্প-পাল্লা বা কম দূরত্বে অর্থাৎ যুদ্ধক্ষেত্রে বা সাগরে ব্যবহারযোগ্য অস্ত্র। তবে এর মানে এই না যে রাশিয়ার হাজার হাজার দূরপাল্লার পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত আছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই মূহুর্তে রাশিয়ার প্রায় এক হাজার ৫শ ওয়ারহেড প্রস্তুত আছে। এর অর্থ হচ্ছে সেগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমারু ঘাঁটি এবং সমুদ্রে সাবমেরিনে বসানো আছে। পৃথিবীর মোট ৯টি দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে। এগুলো হলো- চীন, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য।
এর মধ্যে বিশ্বের ১৯১টি দেশ পরমাণু অস্ত্র-বিস্তার রোধ চুক্তি বা এনপিটি স্বাক্ষর করেছে। এদের মধ্যে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যও রয়েছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, এই দেশগুলো পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূল করবে। সেই লক্ষ্যে তারা ধীরে ধীরে নিজেদের পারমাণবিক ওয়ারহেডের মজুদ কমাবে।
১৯৭০ ও ৮০’র দশকে ওই দেশগুলোর মজুদ করা ওয়ারহেডের সংখ্যা কিছুটা কমেও আসে। তবে ভারত, ইসরায়েল এবং পাকিস্তান কখনো এনপিটিতে স্বাক্ষর করেনি। এছাড়া উত্তর কোরিয়া ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও ২০০৩ সালে তা থেকে বেরিয়ে যায়।
পারমাণবিক শক্তিধর ৯টি দেশের মধ্যে ইসরায়েলই একমাত্র দেশ যারা কখনো তাদের পারমাণবিক কর্মসূচী রয়েছে বলে স্বীকার করেনি, কিন্তু দেশটির হাতে পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে দাবি বিশ্লেষকদের। এদিকে রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেনের হাতে এখনো সোভিয়েত আমলের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তি রয়েছে এবং তারা এটি ব্যবহারের চেষ্টা করছে। একে ‘সত্যিকারের বিপদ’ উল্লেখ করে যেকোনো মূল্যে তা ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।
এখন এসব অভিযোগ তুলে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হামলায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে কিনা তা পুতিনই ভালো জানেন। কারণ পুতিনের মন বোঝা কঠিন এবং তার মতিগতি সম্পর্কে আগে থেকেই তেমন কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে রাশিয়া এমন ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ নিলে সেটা মোটেও ভালো হবে না। এর ফলে পুরো বিশ্বেই বিপর্যয় নেমে আসছে। যুদ্ধ কখনও শান্তি বয়ে আনে না। পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সব দেশকেই তাই যুদ্ধের বাইরে ভিন্ন কিছু চিন্তা করতে হবে।