টালিগঞ্জে দীর্ঘ সময় রুপালি পর্দায় রাজত্বের কথা এলে তালিকায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নাম থাকবে। তিন দশকের ঘটনাবহুল চলচ্চিত্র জীবনে ব্যক্তিজীবন নিয়েও আলোচনায় এসেছেন বিভিন্ন সময়। দুই বিয়ে, তারপরও সঙ্গীহীন ‘অমর সঙ্গী’র এই নায়ক। এ জন্য অবশ্য নিজেকেই দায়ী করেন প্রসেনজিৎ। বিশেষ করে তিনি প্রথম প্রেম ভুলতে পারেননি আজও।
দেবশ্রী রায়কে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন প্রসেনজিৎ। যদিও সংসার টেকেনি। কেন টেকেনি এ প্রসঙ্গে জি ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘বিয়ের কপালটা আমার খারাপ। প্রত্যেক জায়গায় আমি একটাই কথা বলি, যেটাই হয়েছে সেটা আমার দোষ, আমি তাকে বুঝতে পারিনি।’
১৯৯২ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী। তিন বছর পরেই ভেঙে যায় সংসার। এই অভিনেতা জানান, দেবশ্রীর সঙ্গে বিয়ে ভাঙার পর নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। দু-বছর বাড়ির বাইরে যাননি।
প্রসেনজিৎ বলেন, ‘জীবনে প্রথম প্রেম, প্রথম ভালোবাসার একটা আলাদা জায়গা থাকে। আরেকটা ফ্যাক্টর ছিল আমার বয়স। আমি যে সময় বিয়ে করেছিলাম, যদি আরও পাঁচ বছর পর বিয়ে করতাম, হয়ত বিষয়টা আমরা দুজনেই অনেকটা ম্যাচিউরডভাবে হ্যান্ডেল করতে পারতাম।’
কিন্তু এ জন্য কাউকে দায়ী করেন না প্রসেনজিৎ। জীবনের এতোগুলো বসন্ত পেরিয়ে এসে তিনি অনুধাবন করতে পারছেন অতীতের ভুলগুলো। ‘সবটা আমার দোষ’ বলে মেনে নিয়েছেন ভাগ্য।
প্রসেনজিৎ আরও বলেন, ‘সবাই জানতো আমাদের প্রেম, আমাদের ভালোবাসার কথা। আমি ভয় পেতাম। লোকে ভাববে আমার ভালোবাসাটা বোধহয় জেনুইন ছিল না। হয়তো আমার ভালোবাসাটা ভুল ছিল, আমি ভালোবাসতে পারিনি। সেই ভাবনাটা থেকে ভেতরে ভেতরে কষ্ট পেতাম।’
ব্যক্তিজীবনে সে সময় সংকট তৈরি হলেও প্রসেনজিৎ তখনও স্টার। ফলে বাড়িতে পরিচালক, প্রযোজকরা আসতেন। তারাই পরে তাকে ঘুড়ে দাঁড়াতে সাহায্য করেছেন। সাক্ষাৎকারে সে কথা উল্লেখ করে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘কাছের বন্ধুরা আমার বাড়িতে এসে বলেছেন- এটা জীবন নয়। এরপর ধীরে ধীরে গৃহবন্দি দশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াই।’
প্রসেনজিৎ দ্বিতীয় বিয়ে করেন অপর্ণা গুহঠাকুরতাকে। সেই সম্পর্কের ইতি টানেন ২০০২ সালে। সেই ঘরের এক ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে এখন তার সংসার।