আনসার সদস্যের অবহেলায় সেফ হোম থেকে ৭ কিশোরীর পলায়ন!

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago
চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নে মহিলা ও শিশু-কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র (সেফ হোম) থেকে সাত কিশোরী দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের অবহেলায় পালাতে সক্ষম হয়েছে। সাত কিশোরীর পালানোর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দায়িত্বে অবহেলার কথা উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন দেন।

জানা যায়, সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত চট্টগ্রাম বিভাগের একমাত্র নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র (সেফ হোম) থেকে গত মঙ্গলবার রাতে খাবার কক্ষের পেছনের গ্রিল ভেঙ্গে সাত কিশোরী পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর সমাজ সেবা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরীকে প্রধান, অতিরিক্ত পরিচালক বন্দনা দাশ ও উপ-পরিচালক শহীদুল ইসলামকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ‘ঘটনার দিন কর্তব্যরত আনসার সদস্যের অবহেলার কারণেই কিশোরীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে’ বলে উল্লেখ করে বৃহষ্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

সমাজ সেবা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে দায়িত্বরত আনসার সদস্যের অবহেলার বিষয়টি উঠে আসে। তদন্ত কমিটি পর্যালোচনা করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউর দৌলা রেজা বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া কিশোরীদের এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাদের উদ্ধারে হাটহাজারী থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’

জেলা সমাজ সেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজ থাকা কিশোরীরা হলেন- ময়না, জান্নাতী, আরিফা ইসলাম, তুহিন আকতার, লিজা আকতার, দিলরুবা সিদ্দিকা পাখি ও লিজা মণি। পালিয়ে যাওয়া সুমাইয়া (১৯) নামের এক তরুণীকে গত বুধবার সকালে স্থানীয় নুর আলী মিয়ার হাট থেকে জনতা আটক করে সেফ হোমের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করে। প্রথমে আটজন পালালোও এখনো নিঁখোজ আছে সাতজন। পালানো কিশোরীদের বাড়ি কক্সবাজার, নোয়াখালী ও কুমিল্লায়। এদের বয়স ১২ থেকে ১৭ এর মধ্যে। বিভিন্ন মামলার ভুক্তভোগী হিসেবে আদালতের নির্দেশে তারা এ সেফ হোমে ছিল। বর্তমানে এখানে মোট ৫৬ জন হেফাজতি মহিলা ও শিশু ছিল।

জানা যায়, তদন্ত কমিটির সদস্যরা গতকাল সরেজমিনে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে। নিরাপদ হেফাজতিদের পালানোর বিষয়টি তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে গতকাল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবারে প্রেরণ করেন। প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে ঘটনার দিন সেফ হোমে দায়িত্বরত আনসার সদস্যের অবহেলাকে দায়ী করা করা হয়েছে। ঘটনার সময় কর্তব্যরত আনসার সদস্য সেফ হোমে উপস্থিত ছিল না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ কারণেই হেফাজতি কিশোরীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে বলে জানায় তদন্ত কমিটি।

অভিযোগ উঠেছে, ঘটনার দিন রাত ২টা পর্যন্ত একজন আনসার সদস্য ডিউটিতে ছিলেন। ডিউটি শেষে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টা থেকে যে আনসার সদস্যের ডিউটি ছিল তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এ সময় হেফাজতিরা কেন্দ্রের রান্না ঘরের পেছনের জানালার লোহার গ্রিল ধাক্কা দিয়ে সহজে ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। গ্রিলটি মরিচা ধরে নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল।