অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক হচ্ছে শিক্ষা

লেখক:
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

সরকার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয় সম্প্রসারণ করার পদক্ষেপ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যেসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো রয়েছে, সেসব বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। ৩০ এপ্রিল প্রাথমিকের সব আঞ্চলিক উপ-পরিচালক ও জেলা শিক্ষা অফিসারদের কাছ থেকে বিদ্যালয়ের তালিকা চাওয়া হয়েছে। যেসব বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা যাবে, সেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সংখ্যাও জানতে চেয়েছে অধিদপ্তর।

২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বৃদ্ধি করে আট বছর, অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। এটি বাস্তবায়নে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- অবকাঠামোগত আবশ্যকতা মেটানো ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষকের ব্যবস্থা করা।

বর্তমানে শিক্ষকের স্বল্পতা থাকলেও শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ফলে শিক্ষক সংকট থাকবে না। তবে অনেক বিদ্যালয়ে এখনো অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নেই।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ্ রেজওয়ান হায়াত বলেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক করতে আমাদের ৬৯৬টি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি চলমান। যেসব বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করবো, সেসব বিদ্যালয়ে অবকাঠামো থাকতে হবে। আমাদের শিক্ষক রয়েছে, তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

দেশ স্বাধীনের পরপরই প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঘোষণায় ১৯৭৩ সালে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। প্রথম দফায় জাতীয়করণ করেন ৩৭ হাজার ৬৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

 

এরপর তিন দফায় নতুন করে জাতীয়করণ করা হয়েছে ২৬ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয়। নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে ১ হাজার ২০৭টি। দেশে বর্তমানে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এরমধ্যে ৬৯৬টি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা নিশ্চিতে একসঙ্গে কাজ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (৫ মে) শিক্ষানীতি-২০১০-এর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ বিষয়ে সম্মত হয় দুই মন্ত্রণালয়।

 

বৈঠকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মৌলিক ন্যূনতম শিক্ষা অধিকারের ধাপ প্রাথমিক থেকে নিম্নমাধ্যমিক স্তরে উত্তরণের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করবে।

 

বর্তমানে প্রাথমিক থেকে নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা আর্থসামাজিক ও প্রক্রিয়াগত কারণে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। এ ঝরে পড়া রোধ করতে নিম্নমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক বা নামমাত্র ব্যয়ে করার ব্যবস্থা করতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সম্মত হয়েছে দুই মন্ত্রণালয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, শিক্ষাবিদ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল প্রমুখ।