বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বিমান বন্দর থানাধিন কলস গ্রামে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাকা ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে।এতে বিরোধীয় জমিতে কাজ করা নিয়ে যে কোন সময় সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় ক্ষমাতাসীন দলের নেতা এবং বরিশদাল বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন লিটন এর নেতৃত্বে আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে কাজ অব্যাহত রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা ইতোমধ্যে স্থায়ী ভবনের নির্মাণ কাজ করছে। আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোন আদেশ তোয়াক্কা না করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্র জানায়, ১৯৭২ সালে স্থানীয় বাসিন্দা মৃত মোঃ সৈয়দ শামসুল আলমের কাছথেকে একই এলাকার আলী আহমদ মোল্লা নামক ব্যক্তি বেশকিছু সম্পত্তি ক্রয় করেন, পরবর্তীতে আলী আহমদ মোল্লা মারা যাওয়ার পরে তার ওয়ারিশগন ২০১১ সালে মৃত জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী রওশন আরা বেগমের কাছে (এস এ খতিয়ান নং ৪৭৬) এর (৭৪৯,৭২৯,৭৩১,৭৪৪)দাগের মোট ৫৭ শতাংশ জমি বিক্রি করেন।
রওশন আরা বেগম তার ক্রয় কৃত ৫৭ শতাংশ জমিতে বিগত দিনে কোনো কাজ না করায় জমিটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে থাকায় পার্শ্ববর্তী জমির মালিক মৃত সৈয়দ শামসুল আলমের পুত্র সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন লিটন ও তার ভাই মোঃ নজরুল ইসলাম দলীয় ক্ষমতার বলে (এস এ খতিয়ান নং ৪৭৬) এর (৭৪৯ দাগের) ২৭ শতাংশ জমি জোর দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।এরপর থেকেই জমি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়।পরবর্তীতে রওশন আরা বেগম মোকাম বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী বিজ্ঞ আদালতে কয়েক দফায় মামলা করেন এতে উভয় পক্ষকে উক্ত জমিতে কোনো প্রকার কাজ না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
কিন্তু শাহাদাৎ হোসেন গং নিজেদের পেশী শক্তির বলে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাতের আধারে এবং দিনের বেলায় তাদের কাজ চালিয়ে যায়।এসকল অবস্থায় রওশন আরা বেগম নিরুপায় হয়ে পুনরায় শাহাদাৎ হোসেন গংদের বিরুদ্ধে মোকাম বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দ্বায়ের করেন যাহার মামলা নং ৮১/২০২০।সর্বশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মোকাম বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করা হলে আদালতের বিচারক ১৪৪/১৪৫ ধারা জারি করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। তবুও পার্শ্ববর্তী জমির মালিক সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন লিটন গং তাদের জমির পার্শ্ববর্তী মালিক রওশন আরা বেগমের (এস এ খতিয়ান নং ৪৭৬) এর (৭৪৯ দাগের) জমিতে পাকা ভবন নির্মাণের কাজ চালাচ্ছে।আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকবার বিমান বন্দর থানার কর্মরত অফিসারগন কাজ বন্ধ করে দেয়।
আদালত এবং বিমান বন্দর থানার চোখের আড়ালে সে প্রতিনিয়তই তাদের পাকা ভবনের নির্মাণ কাজ করে চলেছেন।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন লিটন জানান, আইনের উপরে কেউ নয়, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।১৯৮১ সালে আমার বাবার পৈতৃক সম্পত্তিতে আমরা কাঠের ঘর নির্মাণ করি এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে আমি এবং আমার ছোট ভাই নজরুল ইসলাম মিলে একটি পাকা ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করলে বাদী পক্ষের রওশন আরা বেগম তার জমিতে আমরা ভবন নির্মাণ করছি এমন অভিযোগ দিয়ে মোকাম বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দ্বায়ের করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক কয়েকবার কাজ বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করলে আমরা কাজ বন্ধ রেখে আদালতের মাধ্যমে মামলা খারিজ করতে সক্ষম হই ।পরবর্তীতে পুনরায় আমরা কাজ শুরু করলে তারা বারো আদালতের মাধ্যমে কাজ বন্ধের নোটিশ জারি করে।
এরপর সর্বশেষ গত ৫/১১/২০২০ তারিখ পর্যন্ত কাজ বন্ধের নির্দেশনা থাকলে আমি কাজ বন্ধ রাখি। তবে এরপর এখনো কোনো কাজ বন্ধের নির্দেশনা আদালত থেকে আমাদের কাছে না পৌছালে আমরা কাজ চালিয়ে যাই। যদি বাদি পক্ষ আবারো কাজ বন্ধের নির্দেশনা জারি অরে আমাদের কাছে কাগজ পৌছাতে সক্ষম হয় তাহলে আমরা কাজ বন্ধ রাখবো।
এ ব্যাপারে ভুক্তভুগী রওশন আরা বেগমের পুত্র মোঃ লিটন জানান,আমার মায়ের ক্রয়কৃত সম্পত্তি যা আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগ-দখল করে আসছি।হটাৎ চলতি বছরের শুরুর দিকে শাহাদাৎ হোসেন লিটন ও তার ভাই নজরুল ইসলাম আমাদের ক্রয় কৃত জমির মধ্যে জোরপূর্বক তাদের পাকা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করে।এরই প্রেক্ষিতে আমার মা বাদী হয়ে মোকাম বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করলে আদালত তাদের ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ করলেও তারা আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ভবন নির্মাণ করছে। এবং মামলা করাতে নানা সময় আমাদের পরিবারকে নানা কটুক্তি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।এ বিষয়ে রওশন আরা বেগমের পরিবার প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।