বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বর্তমানে মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটে সাগর উত্তাল রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেছেন, ‘প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ৬০ থেকে ৮৯ কিলোমিটার হলে সেটাকে ঘূর্ণিঝড় বলি। এখন পর্যন্ত এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। ফলে এটি এখনও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়নি।’
‘এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত নিম্নচাপ আকারে আছে। এটা আরও ঘনীভূত হতে পারে। এটার মুভমেন্ট এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের দিকেই। তবে এর গতিবিধি ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিবর্তন হয় কখনও কখনও, আবার কখনও একই দিকে আসতে থাকে। এর গতিবিধি পরিবর্তন হবে কি না, তাও এখনই বলা যাচ্ছে না। এটা বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে আসছে’, যোগ করেন এ আবহাওয়াবিদ।
শাহানাজ সুলতানা আরও বলেন, ‘ইদানীং যে কয়েকটা ঘূর্ণিঝড় গেছে, সেগুলো ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। যার কারণে বাতাসটা আমরা কম পেয়েছি। এখন যদি নিম্নচাপ আকারেও বাতাস বাংলাদেশে সরাসরি আসে, সেক্ষেত্রে আমাদের দেশ বাতাস অনেক বেশি পাবে। বাংলাদেশে সরাসরি ঢুকলে ঘূর্ণিঝড় না হয়ে নিম্নচাপ হলেও অনেক বেশি বাতাস পাওয়া যাবে। জোরালো বাতাস নিয়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ অতিক্রম করতে পারে এটি।’
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে পশ্চিম/উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে।