শামীম আহমেদ ॥ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন,একটি সংবেদনশীল পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগনের সেবা নিশ্চিত করতে চাই।
থানায় গেলে মানুষ পুলিশি সেবা পাওয়ার জন্য দ্ধিধা দন্দের মধ্যে থাকে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আমরা সে বিষয়ে মানুষের শংকা দুর করতে চাই।
কেউ সহিংসতার শিকার হয়ে থানায় আসলে তাকে ন্যায় সঙ্গত পুলিশি সেবা দিতে চাই।যেহেতু থানা থেকেই জনগনের অধিকাংশ সেবা দেয়া হয়।
সেহেতু থানায় গিয়ে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।কাউকে যেন দালাল ধরতে না হয়। সেজন্য সংবেদনশীতার সাথে সেবা নিশ্চিত করতে চাই।
আজ রবিবার(১৮ অক্টোবর) বেলা ১২ টায় বিএমপি কাউনিয়া থানার উদ্যোগে অফিসার ইনচার্জ আজিমুল করিমের সঞ্চালনায় বিসিক ০৩ নং ওয়ার্ড বিট কার্যালয়ের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন,আমরা জনগনের প্রত্যাশার সমান সেবা করতে চাই।সমাজে অপরাধ দানা বাঁধার আগেই তা নির্মুল করতে চাই।
এ জন্য আমরা কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিংয়ের কাঠামো তৈরী করেছি।কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং একে অন্যের পরিপূরক।
শুধুমাত্র এর উপায় ও পদ্ধতি বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।তাই পুলিশকে তথ্যদিয়ে সহযোগিতা করুন। পুলিশ জনগনের সহযোগিতা যত বেশী পাবে ততই তাদের সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।
বিএমপি কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন,মাদক নির্মুলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ফ্রন্টলাইনে কাজ করছে পুলিশ।
মাদকের প্রতি আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। মাদকের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের আমরা আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করেছি।
বাংলাদেশ পুলিশ জনগনের কাছে গনমুখী পুলিশ হিসেবে নির্ভেজাল সেবা দেয়ার জন্য বদ্ধপরিকর।বিসিক এলাকাকে আমরা একটা মডেল হিসেবে নিতে চাই।
এখানে কোন বখাটের উৎপাত থাকবেনা।এখানে পুলিশের টহল বৃদ্ধি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে কর্মচারীদের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করা হবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন,আমরা মুজিব বর্ষ অতিক্রম করছি।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের এ দেশ উপহার দিয়ে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল এ দেশ হবে বিশ্বের বুকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ।তিনি বলেছেন তোমরা বৃটিশ পুলিশ নও তোমরা বাংলাদেশের জনগনের পুলিশ।
যেই বাঙ্গালীর রক্তদিয়ে এ দেশকে কেনা হয়েছে আমরা সেই বাঙ্গালীর স্বপ্নের পুলিশ হতে কাজ করছি।
এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তেব্য উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর মোঃ খাইরুল আলম বলেন,মুজিব বর্ষেরঅঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার।
পুলিশকে জনতার পুলিশে পরিনত করার জন্য আজকে আমাদের এ আয়োজন।পুলিশের সাথে জনগনের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করার জন্য বিটপুলিশিং কার্যক্রম চালু হয়েছে।
বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশের সেবাকে জনগনের নিকট পৌঁছে দিয়ে সেবার কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করা হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার গ্রাম আমার শহর কর্মসূচী বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করতে চান।
দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করতে হলে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির আরো উন্নতি করে জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিট পুলিশিং কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে এ এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে।
তিনি বলেন,বর্তমানে সমাজে বিভিন্ন অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে।এসব অপরাধ সম্পর্কে বিট অফিসারকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন।মানব পাচার, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং, চাঁদাবাজী সম্পর্কে তথ্য দিন।পুলিশ কমিশনার স্যারের নের্তৃত্বে বিএমপি পুলিশ
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে বিএমপি পুলিশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।আইজিপি স্যার মানুষের দোড়গোড়ায় পুলিশি সেবা নিশ্চিত করেছেন।
আইজিপি স্যারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে।কোন পুলিশ সদস্য মাদকের সাথে জড়িত থাকলে তাকে ছাড় দেয়া হবেনা।
কমিউনিটি পুলিশিং,ওপেন হাউজ ডে,স্কুল ভিজিটিং এর মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে আমরা জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আমরা বরিশাল থেকে সকল প্রকার অন্যায় অপরাধমুলক কার্যকলাপ দুর করে একটি সুন্দর সু-শৃঙ্খল নগরী গড়ে তুলতে চাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম বলেন,পুলিশের সেবার মুল কেন্দ্র হচ্ছে থানা।
এ থানা এলাকাকে ছোট পরিসরে ভাগ করে পুলিশি সেবার মান বৃদ্ধির জন্য বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে আমরা জনগনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবো।জনগনের কাংক্ষিত সেবা নিশ্চিত করতে পারবো।
সাধারন মানুষের মাঝে পুলিশ সম্পর্কে একটা ভীতি কাজ করে,বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আমরা সে ভীতিকে দূর করতে চাই।
বাংলাদেশ পুলিশ জনগনের কাধে কাধ মিলিয়ে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিসিক মালিক সমিতির সভাপতি এবং ফরচুন সুজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ছোট পরিসরে হলেও বিসিক এলাকায় বিট কার্যালয় স্থাপন করায় বিএমপি পুলিশের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে দেশ আজ ডিজিটাল হয়েছে। বিসিকে প্রায় ২০ হাজার লোকের অবস্থান।এখানে আইন শৃংখলার উন্নয়নের জন্য পুলিশের বিশেষ সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ছিলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার সদর দপ্তর আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ,বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিসিক মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা এডভোকেট আফজালুল করিম।
অনুষ্ঠানে বিসিকের শ্রমিকরা বলেন, এই বিট পুলিশিং কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে বিসিকের নারী শ্রমিকরা স্বাচ্ছন্দে চলা ফেরা করতে পারবে।মাঝে মাঝে বহিরাগত কতিপয় বখাটে যুবকরা এখানে চুরি ছিনতাই ও ইভটিজিংয়ের সাথে জড়িত তারা আমাদেরকে নানা ভাবে হয়রানি করে। বিটপুলিশিং কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে আমরা এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তিপাব।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন,কাউনিয়া থানার সহকারী কমিশনার মোঃ মাসুদ রানা, বিসিকের ডিজিএম জালিস মাহমুদ, বরিশাল সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট মাহাবুবুর রহমান মধু, বিসিক কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারন সম্পাদক ইব্রাহিম খান, বিসিক মালিক সমিতির সদস্য শাহারিয়ার বশির, বিসিক ৩ নং কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিট অফিসার এস আই আবুল বাসার প্রমুখ।