প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, আসন্ন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। তিনি বলেন, ”আমরা হয়তো বা ছিলাম না কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশসহ অন্যান্য নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।
আশা করছি সামনের নির্বাচনগুলোও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। ”
রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেড মিলনায়তনে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডির উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি আরো বলেন, ‘অনেকের একটি বা দুটি আঙ্গুলে সমস্যা থাকে তাই আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হবে ১০ আঙ্গুলেরই। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি যেন স্মার্ট কার্ডে কোন ভুল না থাকে। প্রয়োজনে দুটি বা তার অধিক তথ্য পরিবর্তন করা যাবে স্মার্ট কার্ডে। ’
এদিন, নারায়ণগঞ্জের ২০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির মাঝে এ কার্ড বিতরণ করা হয়। পরে ধাপে ধাপে নারায়াগঞ্জ সিটি করপোরেশন, শহর ও বন্দরের সর্বমোট ৯ লাখ ৯০ হাজার ৯৩২ জন ভোটারকে এ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের পৌনে পাঁচ লাখ ভোটারের জন্য স্মার্টকার্ড ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসে এসে পৌঁছেছে।
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ প্রসঙ্গে নুরুল হুদা বলেন, যখন পৃথিবীর কাছে দেশের অবস্থান অপরিচিত ছিল, তখন বিশ্বে নারায়ণগঞ্জের অবস্থান ছিল।
মানুষ তখন নারায়ণগঞ্জকে জানতো। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের অবস্থান অনেক আগে থেকেই ছিল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আগামী ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশে ৯ কোটি ৪০ লাখ স্মার্টকার্ড বিতরণ করতে সক্ষম হবো। আসলে স্মার্টকার্ড কার্যক্রম নিয়ে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে গেছি। পিসিআর এর সাথে চুক্তিতে একটু দেরি হওয়ায় একটু বিলম্ভ হয়েছে। আইরিস ও টেনফিঙ্গার মেশিনের জন্য একটু সমস্যা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের সাথে আমাদের একটি চুক্তি ছিল সেটার অধীনে আমরা আগামী ১ মাসের মধ্যে সেগুলো পেয়ে গেলে দ্রুত গতিতে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হবে। আশা করছি খুব দ্রুত স্মার্টকার্ড বিতরণ কাযর্যক্রম শুরু করে বিতরণের কাজ শেষ করতে পারবো।
তিনি বলেন, স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে মানুষ আরো স্মার্ট হয়ে যাবে। আপনারা আগে দেখেছেন কিভাবে ভোট জালিয়াতি হয়েছে। একজনের ভোট অন্য আরেকজন দিয়ে দিয়েছে। আর স্মার্টকার্ড হওয়ার পর সেই সুযোগ থাকবে না। ভোট জালিয়াতি বন্ধ যাবে। এছাড়া জাতীয় পরিচয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সনাক্ত করতে খুব সহজ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এই স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে আমাদের নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে। আগে একটি লোক আরেকটি লোকের ভোট দেয়ার সুযোগ থাকলেও এখন আর সে সুযোগ থাকবে না। কারণ ছবিসহ হাতে স্মার্ট কার্ড থাকবে। ২৬ থেকে ২৭টি সেবা এই কার্ডের মাধ্যমে আপনারা পাবেন।
স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনারের সচিব হেলাল উদ্দিন আহম্মদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. রাব্বী মিয়া, জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক, র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান, নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য ও বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে ২৭ ওয়ার্ডের মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২জন ও মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯ জন।