বলিউড তারকারা নতুন নতুন ডিজাইনার আউটফিটে ফটোগ্রাফারদের হাসিমুখে পোজ দেন। জুতো কি ব্যাগেও থাকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের ছোঁয়া।
বিলাসিতায় গা-ভাসানো এ তারকারাও ভীষণ কৃপণ। বডিগার্ড বা মেকআপ ম্যানকেও মাসের বেতনটা দিতে ভুলে যান।
শ্রীদেবীর দুই মেয়ে জাহ্নবী, খুশির দেখভালের জন্য যিনি ছিলেন, তাকে যে কোনও অনুষ্ঠানে দেখা গেলেই নাকি খুব খিটখিটে মেজাজে পাওয়া যেত। তিনি জানান, মালিক ঠিক মতো বেতন দেন না! প্রযোজক বনি কাপুরের স্ত্রী, এক সময়ের বলিউডের এক নম্বর নায়িকা এমনটা করতে পারেন নাকি?
এই দলেই পড়েন কাপুর সিস্টার্স কারিশমা এবং কারিনা। বড় বোন কারিশমা সম্পর্কে নাকি একটা কথা প্রায় প্রবাদের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। তিনি সঙ্গে পার্স ক্যারি করেন না! হ্যাঁ, সঙ্গে লুই ভিতো বা শানেল-এর লাখ টাকার ব্যাগ থাকতে পারে, কিন্তু তাতে টাকা থাকতে হবে, এমন আইন কে বানিয়েছে? বছর পাঁচ-সাতেক আগে একবার নাকি সুনীল শেঠির স্ত্রী মানা শেঠি ডিজাইনার গারমেন্টের এক চ্যারিটি এগজিবিশন অর্গানাইজ করেছিলেন। চাকচিক্য বাড়াতে সেখানে হাজির ছিলেন তারকারা। সেখানে কারিশমা কয়েকটি জিনিস পছন্দ করে, ব্যাগে ভরে যখন গুটিগুটি পায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসছেন, তখন দামের কথা বলা হলে তিনি নাকি বিনা সংকোচে বলে দেন, তিনি পার্স সঙ্গে রাখেন না!
তার বোন কারিনা, যতই নবাব-গৃহিণী হোন, তিনি যে ‘কঞ্জুস’ নিজেই স্বীকার করেছিলেন এক টিভি শোয়ে এসে। বলেছিলেন, মালাইকা আর অমৃতার সঙ্গে বেরোলে কখনও টাকা নিয়ে বেরোন না।
শিল্পা শেঠিরও খরচা না করার সুখ্যাতি ছিল। বিয়ের আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতেন এক মেকআপ আর্টিস্টের কাছে মেকআপ সেরে। তার জন্য সে বেচারার পারিশ্রমিক চাওয়া ছিল বারণ। শর্ত থাকত, শিল্পা যে ছবিতে অভিনয় করবেন, সেখানেও নাকি সে মেকআপ করার সুযোগ পাবে। পাওনা বুঝে নেবে প্রযোজকের কাছ থেকে। শিল্পার টাকাও বাঁচল, আবার মেকআপ আর্টিস্টও খুশি!
ড্রাইভারদেরও অনেক বলিউড তারকাই বেতন দেন না। ছবির সেটে যে তারকা যত দামের গাড়ি নিয়ে আসেন, তার উপর একটা ভাতা ধরা থাকে। যত দামি গাড়ি, তত বেশি ভাতা। ড্রাইভারের জন্যও আলাদা ভাতা থাকে। পুরো খরচ প্রযোজকের। ড্রাইভারদের প্রতি নাকি অলিখিত নির্দেশ থাকে, খরচ তুলে নিতে হবে সেখান থেকে।
সালমান খান বা বরুণ ধাওয়ান কিংবা অক্ষয় কুমারের বডিগার্ডদের মতো সব তারকার বডিগার্ডরাই ভাগ্যবান নয়। মালাইকা অারোরার এক প্রাক্তন বডিগার্ড চাকরি ছেড়েছিলেন ঠিক মতো বেতন না পাওয়ায় ও নায়িকার খিটখিটে মেজাজের কারণে।
কিপটেমির দৌড়ে এদের চেয়ে অনেক এগিয়ে কপিল শর্মা। তিনি নাকি মাঝে মধ্যেই স্টুডিওতে আসতেন অটোতে। কিন্তু ভাড়া দিতেন না। কপিল বলতেন, ‘আমি কপিল শর্মা, চেনো না!’
করণ জোহরের প্রোডাকশন হাউস নিয়েও বহু কথা শোনা যায়। মাস গেলে মাইনে নাকি অনেকেই পান না। বিশেষ করে যে সব বিগ বাজেটের ছবি ফ্লপ করেছে, তার সঙ্গে যুক্ত বহু কর্মী নাকি এখনও কাঁদেন টাকা না পাওয়ার দুঃখে। এ রকমই আর এক বড় প্রযোজক সঞ্জয় লীলা বানশালী। তার শ্যুটিং সেট যতই ঝমকালো হোক, মানুষটাকে ততটা উদার নন। খাওয়াদাওয়া, পোশাক… নানা ব্যাপারে প্রচণ্ড হিসেবি মানুষ।
ইন্ডাস্ট্রির সবাই অবশ্য এ রকম নয়। এখানে সালমান, রণবীর সিং, রানি মুখার্জী, দীপিকা পাড়ুকোন, বরুণ ধাওয়ানের মতো দিলদরিয়া অভিনেতারাও আছেন।
সূত্র : আনন্দবাজার