মৌরি আর হাসে না

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

ব্রেন স্ট্রোকে মা মারা যায় ২০১১ সালে। এরপর মা মরা মেয়েটিই বাবার শান্তি। ইংরেজি বিভাগে পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষক হবে, ধরবে পরিবারের হাল। মেয়েকে নিয়ে এ প্রত্যাশা ছিল সব সময়।

হঠাৎ বাবা ও মেয়ের সেই স্বপ্ন এলোমেলো হয়ে গেছে। বাঁচা মরার সন্ধিক্ষণে তিনি। গত বছরের শেষ দিকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়েছে তার দুটি কিডনিই নষ্ট।

মেয়েটির নাম আমিনা রহমান মৌরি। তিনি বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি জেলার রামপাল উপজেলার অন্তর্গত গিলাতলা এলাকায়।

গত বছর তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার প্রবেশপত্র পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরীক্ষা দেয়া হয়নি। এর মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মৌরি।

ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর চিকিৎসক জানান, দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে তার। এ সমস্যা ধরা পড়ার পর গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ডায়ালাইসিস। এ নিয়ে ৭৪ বার ডায়ালাইসিস করা হয়েছে তার।

মৌরি বলেন, ঘাড়ের ক্যাথাটার ও হাতের ফিস্টুলাসহ দুটা অপারেশন করা হয়েছে। ডায়ালাইসিস ছাড়া জীবন অচল হয়ে গেছে। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হয়।

 

একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মুজিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ করেই অজ্ঞান হয়ে যায় সে। এখন প্রত্যেক সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। প্রতি মাসেই ওষুধ ও ডায়ালাইসিস দিয়ে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ধারদেনা করে এতদিন ডায়ালাইসিস ও ওষুধের খরচ চালিয়েছি। এখন আর পারছি না। এই ভার বহন করাও কঠিন হয়ে গেছে। ঠিকমতো চিকিৎসা না করাতে পারলে হঠাৎ কখন কি হয়ে যায় আল্লাহ জানেন। আমিও হার্টের রোগী।

মৌরির বন্ধু সরকারি পিসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম বলেন, হাসি খুশি মেয়েটির হাসিমুখ বন্ধ হয়ে গেছে। সমাজের বিত্তবানদের কাছে চাওয়া সবাই যেন আমাদের বন্ধুটির পাশে দাঁড়ান।

মৌরির চিকিৎসা চলছে খুলনার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের ডা. ওবায়দুল হকের কাছে। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব কিডনি প্রতিস্থাপন করার।

এ পরিস্থিতিতে সবার কাছে মানবিক সাহায্যের আবেদন করেছেন মৌরির বাবা মুজিবুর রহমান। যোগাযোগ করা যাবে ০১৬১১ ৩২১৪৯০ এবং ০১৭১৮ ৮৪৯৭৫০ নম্বরে।