না ফেরার দেশে চলে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা কে এস ফিরোজ। আজ বুধবার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন বাংলা নাটক ও সিনেমার জনপ্রিয় এই মুখ। টেলিভিশন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে এই গুণী অভিনেতা জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। তার মৃত্যুতে শোকাহত পুরা শোবিজ মহল।
বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটির শুরুর দিক থেকে অভিনয় করেছিলেন কে এস ফিরোজ। তার এমন চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে বলে জানান ‘ইত্যাদি’র উপস্থাপক, পরিচালক, লেখক ও প্রযোজক হানিফ সংকেত।
হানিফ সংকেত বলেন, ফিরোজ ভাই হঠাৎ করেই চলে গেলেন। এই শুনলাম তিনি অসুস্থ, সকালে উঠেই শুনি তিনি নেই। তার এই চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের পুরো ‘ইত্যাদি’ পরিবার শোকাহত। আশির দশক থেকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফিরোজ ভাই। তাঁকে ডাকলেই পাওয়া যেত। ফিরোজ ভাই আর ‘ইত্যাদি’ করবেন না, মানতে কষ্ট হচ্ছে।
হানিফ সংকেত পরিচালিত প্রায় সব নাটকেই দেখা গেছে কে এস ফিরোজকে। এ প্রসঙ্গে হানিফ সংকেত বলেন, ‘মারা যাওয়ার পর সবাই গতানুগতিকভাবে বলে, ভালো মানুষ ছিলেন। সে জন্য বলছি না, তিনি আসলেই একজন গুণী মানুষ ছিলেন। তাঁকে শুটিংয়ে ৯টায় ডাকলে তিনি ১০ মিনিট আগে এসে বসে থাকতেন। যাওয়ার জন্য তাড়া দিতেন না। দিনে হয়তো তার তিন মিনিটের শুটিং আছে, তিনি কল টাইমে এসে বসে থাকতেন। বলতেন, আমার তাড়া নেই; যখন সুবিধা হয় আমার অংশের শুট করবেন।’
অভিনেতা কে এস ফিরোজকে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী বুধবার বাদ জোহর বনানী সেনানিবাস কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম।
তিনি জানিয়েছেন, ‘ফিরোজ ভাই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে করোনার আগে সিএমএইচে ভর্তি ছিলেন। তখন সুস্থ হয়ে বাসায় ও ফিরে যান। গত তিনদিন আগে আবারও এ সমস্যায় ভুগে সিএমএইচে ভর্তি হন। আজকে সকালে না ফেরার দেশে চলে যান।’
কে এস ফিরোজের অভিনয় জীবনের শুরুটা হয়েছিল মঞ্চনাটক দিয়ে। নাট্যদল ‘থিয়েটার’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে অভিনয় শুরু করেন তিনি। টিভিপর্দায় প্রথম অভিনয় করেন ফখরুজ্জামানের রচনা ও জামান আলী খানের প্রযোজনায় ‘দীপ তবুও জ্বলে’ নাটকে। টেলিভিশনে কে এস ফিরোজের প্রথম আলোচিত নাটক জিয়া আনসারী প্রযোজিত ‘প্রতিশ্রুতি’।
বাংলা নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও ছিল কে এস ফিরোজের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি। কে এস ফিরোজ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘লাওয়ারিশ’। কে এস ফিরোজ ১৯৬৭ সালে সেনাবাহিনীতে কমিশন পদে চাকরি শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে মেজর পদে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন।