নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী-এমপি বলেছেন, ‘নৌ দুর্ঘটনায় দোষীদের বিচার অবশ্যই হবে। কোন দুর্ঘটনার তদন্তে বিলম্ব হওয়ার সুযোগ নেই। এরইমধ্যে আমরা একটি দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন অল্প সময়ের মধ্যে প্রকাশ করেছি। ঢাকার দুর্ঘনায় আইনি তদন্ত চলছে, বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বিচারও হবে।
শনিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে বরিশাল নদী বন্দর এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। এর আগে আসন্ন ঈদ উল আযহা উপলক্ষে নৌ পথ নিরাপদ এবং বিভিন্ন সমস্যা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করার লক্ষ্যে বরিশালে পরিদর্শনে আসেন প্রতিমন্ত্রী।
নদী বন্দর পরিদর্শ শেষে তিনি আরও বলেন, ‘নৌপথ কিভাবে সুগম ও নিরাপদ করা যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আজ ঢাকা-বরিশাল নৌপথ পরিদর্শন করেছি। এর আগেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে পরিদর্শন করা হয়েছে। যেসকল সমস্যা সামনে এসেছে তা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সমাধান হবে বলে আশ্বাস্থ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ড্রেজিং ব্যবস্থার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর আমলে কিছু ড্রেজার কেনা হয়েছিলো। এরপর দীর্ঘ বছরে আর কোন সরকার ড্রেজার সংগ্রহ করেনি। কিন্তু গেলো দশ বছরে সরকার ৪৫টি ড্রেজার যুক্ত করেছে। আগে নদী পথে পলি পরে বা অন্য কোন কারণে ত্রুটি দেখা দিলে তা সমাধানে ড্রেজারের প্রয়োজন হলে অন্তত এক বছর অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু এখন আর অপেক্ষার প্রয়োজন হয় না। চাইলেই তাৎক্ষনিকভাবে ড্রেজের পাঠানো যাচ্ছে।
নদী পথ সুগম ও নিরাপদ করে তোলার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঢাকা-বরিশাল নৌপথে কিছু ডুবোচর আছে। যার ড্রেজিং কাজ অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হবে। কিছু সমস্যাও আছে। যেমন অনেকেই মনে করেন ড্রেজিং এর কারণে নদী ভাঙন হয়। তাই জনপ্রতিনিধিসহ অনেকেই বাধা দেয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে নদী পথের নাব্যতা ঠিক রাখতে ড্রেজিং এর বিকল্প নেই।
তাই নদী পথ সুগম করতে সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিং এর ক্ষেত্রে কাটা বালু ফেলার বিষয়টি আলাদা। তবে আগে আমাদের ক্যাপাসিটি কম ছিলো। এখন আমরা দশ কিলোমিটার দূরেও ড্রেজারের বালু কেটে ফেলতে পারবো। আর ১-২ কিলোমিটার দূরে ফেলাও এখন সম্ভব।
বরিশালের উন্নয়নের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী-এমপি বলেছেন, ‘ঐতিহ্যবাহি বরিশালের ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আর সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই বরিশাল নদী বন্দরকে সুন্দর ও আধুনিকায়ন করতে খুব শিঘ্রই কাজ শুরু হবে বলেছেন তিনি।
বরিশাল নদী বন্দর পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক, বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান, নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের পরিচালক মো. শাহজাহান, বরিশাল নদী বন্দর ও পরিবহন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার, বাংলাদেশ যাত্রীবাহী নৌপরিবহন সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন প্রমুখ।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী বরিশালে নদী বন্দরে পৌছালে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ এবং ছাত্রদলসহ নৌ বন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।