নানা ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকা এবং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যাচার করায় অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে দেশের সকল সেনানিবাস এবং এর আওতাভুক্ত সকল স্থাপনায় তার প্রবেশ, সিএমএইচে চিকিৎসাসেবা, অফিসার্স ক্লাব, সিএসডি শপ ইত্যাদিতেও তার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ হলো।
রোববার (১৯ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী (অবসরপ্রাপ্ত) বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে সেনানিবাসে প্রবেশ এবং সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যাচার করেন, যা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর এনডিসির কমান্ড্যান্ট থাকাবস্থায় একাধিক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি এনডিসিতে পরিচালিত বিভিন্ন কোর্সের সাথে বিদেশে ভ্রমণকালেও অনেক মেয়েকে নিয়ে চলাফেরা করেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তার এই অশোভনীয় আচরণ এবং মেলামেশার ছবি কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হলে কর্তৃপক্ষ বিব্রত হয় এবং তাকে বিভিন্নভাবে উপদেশ দেয়া হয়।
আইএসপিআর জানায়, হাসান সারওয়ার্দী এলপিআরে থাকাকালীন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। একই বছরের ২১ নভেম্বর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সেনা আইন বহির্ভূতভাবে মেসকিট (সামরিক পোশাক) পরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে বিবাহ করেন। কিন্তু তিনি বিয়ের আগে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব বর্তমান স্ত্রীকে নিয়ে ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর থেকে একই বাসায় অনৈতিকভাবে অবস্থান করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে হাসান সারওয়ার্দীর ব্যক্তিগত জীবনের আমলনামা তুলে ধরে বলা হয়, তিনি বিয়ের আগে তার বর্তমান স্ত্রীকে নিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন, সাজেক, রিসোর্ট, খাগড়াছড়িতে অবকাশ যাপন, বিভিন্ন সময় ভারত, থাইল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডে ভ্রমণ করেন। যার সচিত্র আলামত সামরিক ও অসামরিক পরিমণ্ডলে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। এছাড়া তিনি যাকে বিয়ে করেন সে একজন বিতর্কিত নারী হিসেবে পরিচিত।
আইএসপিআর জানায়, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর এ ধরনের আচরণ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর। এ ধরনের ঘটনা সেনাবাহিনীতে কর্মরত অফিসার এবং অন্যান্য পদবির মধ্যে নেতিবাচক উদাহরণ হিসেবে কাজ করে ও বিরূপ প্রভাব ফেলে। সামগ্রিক বিবেচনায় গত বছরের ১০ এপ্রিল ওই অফিসারকে (হাসান সারওয়ার্দী) সেনানিবাস ও সেনানিবাস আওতাভুক্ত এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, সেনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অবাঞ্ছিত ব্যক্তির জন্য সেনানিবাস ও সেনানিবাসের আওতাভুক্ত সকল স্থাপনা এবং সেনানিবাসের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা যেমন- সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাসেবা, অফিসার্স ক্লাব, সিএসডি শপ ইত্যাদিতে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ হয়।