হঠাৎ ই গতকাল রাতে অনেকটা কান্নাজড়িত কন্ঠে ফোন।বললাম কি খবর? স্যার আমার করোনা রিপোর্ট
নেগেটিভ এসেছে।
আলহামদুলিল্লাহ্, এতো খুশীর খবর,প্রিয়জনদের জন্য
সস্তির খবর। আসলে তার কান্নার কারনও আছে।গত একমাস ছেলে দুটোকে গ্রামের বাড়ীতে পাঠিয়ে একা একটি বাসায় করোনার সাথে একক যুদ্ধে জয়ী হয়েছে।
এটা আনন্দের কান্না।
গত পহেলা জুন আক্রান্ত হওয়ার পর তার ছোটবোনের
ফ্রেন্ড ডাঃ মনীষার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নিজেই নিজের চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছেন।সাথে সাথে প্রাথমিকের ও প্রাথমিকের বাইরে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের খোজ নিয়েছেন,অভয় দিয়েছেন ও চিকিৎসার ব্যাপারে সাধ্যমত পরামর্শ দিয়েছেন আবার
দেখলাম জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে তার অভিজ্ঞতা
শেয়ার করেছেন।
সেদিন দেখলাম মেসেঞ্জারে নক করে বলল , স্যার এ বিকাশ নম্বরে যা পারেন কিছু টাকা পাঠান।আমি ভাবলাম আত্মীয়স্বজন কেউ হয়ত হবে।আমি জিজ্ঞেস
করলাম কে? সে বলল যে,আমার এ ছোট ভাইটা রাঙামাটির।বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেকগুলো গান লিখেছে।স্বামী স্ত্রী দুজনই করোনা আক্রান্ত।বাসায় বাজার করার টাকা নেই।আসলে অন্যের জন্য নিজেকে
ছোট করা মঝে মাঝে আমারও আত্মসম্মানে লাগে কিন্ত তার লাগেনা।অবশ্য এর প্রতিদান অনেক সময়
পাওয়াও যায় যেমন পেয়েছে সে।টেস্ট এখন বরিশালে
বাসায় এসে নেয়ই না।ডিডি সারকে অনুরোধ করলেন।
আমরা চেষ্টা করলাম।বরিশালে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মেডিকেল বাসায় এসে নিতে রাজী হল না।পরে সে ঠিকই তার সাবেক ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের রাজনৈতিক সহকর্মী বড়বোন এর সুপারিশে বাসায় বসে স্যাম্পল দেয়।অর্থাৎ উপকার করলে ঠিক তার কাছ থেকে না পেলেও অন্য স্পেস থেকে পাওয়া যায়।এটা তার প্রমান। অবশ্য কেউ কেউ তার আবার সমালোচনাও করেছে এই বলে যে,ব্যাডা করোনা অইছে ঔষধ খা,হুইয়া থাক,এত লাইভে আসার কি দরকার?
সারমর্ম( কি পাইলাম): এভাবেই প্রাথমিকের অনেক সহযোদ্ধা করোনা যুদ্ধে জয়ের পথে এগোচ্ছেন।
ফোন দিয়ে বিজয়ের হাসি অনেকই শুনিয়েছেন।কিন্তু
ওর মত কেউ কাদেনি।আর এভাবেই এগিয়ে যাবে প্রাথমিকের করোনা যোদ্ধাদের হাসিকান্না বিজড়িত এই সব দিন রাত্রি।লিখতে লিখতে গতকালের গ্লোব বায়োটেকের ড. আসিফ মাহমুদের কান্নাটি চোখের সামনে চলে এল।