আন্তঃস্কুল ফুটবল- শব্দ দুটি শুনলেই অনেকে ফিরে যান শৈশবে। এক সময়ের দেশব্যাপি জনপ্রিয়তা পাওয়া এ টুর্নামেন্টের মাধ্যমেই ফুটবলে হাতেখড়ি হয়েছে অনেক নামকরা ফুটবলারের। একজন ভালো মানের ফুটবলার হতে না পারুক, অনেকেই জীবনে ফুটবলে প্রথম লাথি মেরেছেন এই প্রতিযোগিতা থেকেই। ফুটবলার তৈরির সেই আন্তঃস্কুল টুর্নামেন্ট হারিয়ে গেছে দেশের খেলাধুলার সূচি থেকে।
দীর্ঘদিন পর সেই আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উচ্চ বিদ্যালয়ের সঙ্গে টুর্নামেন্টে মাদরাসাও সম্পৃক্ত করা হবে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে টুর্নামেন্ট শুরুর পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে। বাজেট ও পেপারওয়ার্কস শুরু করেছে দেশের ক্রীড়ার এ অভিভাবক সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশব্যাপি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে যে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়ে আসছে, সে আদলেই আন্তঃস্কুল টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার দেশব্যাপি তৃণমূল পর্যায় থেকে প্রতিভা অন্বেষণ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাদের আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্টের পরিকল্পনার কথা জানান।
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন,‘আমরা আরেকটা জিনিস করতে যাচ্ছি। সেটা হলো আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট। প্রাইমারি স্কুল পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা যে ফুটবল টুর্নামেন্ট হয় তার উপরের পর্যায়ের অর্থাৎ হাইস্কুল নিয়ে ইন্টারস্কুল টুর্নামেন্ট করবো। ছোটবেলায় এ টুর্নামেন্ট খেলতাম। এক সময়ে জনপ্রিয় এ ফুটবল প্রতিযোগিতা এখন আর নেই। আমরা আবার সে টুর্নামেন্ট শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’
কেবল মুখেই নয়, কাগজ-কলমেও পরিকল্পনা অনেক দূর এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন ড. বীরেন শিকদার, ‘ইতিমধ্যে আমরা সবকিছু রেডি করেছি। প্রতিযোগিতার নামকরণের বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। প্রস্তাবিত নামটি বলতে চাচ্ছি না, অনুমোদন হয়নি বলে।’
এ টুর্নামেন্ট নিয়ে বৃহস্পতিবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে একটি সভাও হয়েছে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক, বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ।
‘হ্যাঁ, মন্ত্রণালয় এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে। বাজেট তৈরির কাজও চলছে। টুর্নামেন্টের মূল উদ্যোক্তা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় হলেও এ টুর্নামেন্ট আয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও সম্পৃক্ত থাকবে। নাহলে তো এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন সম্ভব হবে না। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা প্রাইমারি স্কুল ফুটবলের মতো ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের বিভাগ রাখার কথাও ভাবছে মন্ত্রণালয়’- বলেছেন দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রীড়া সংগঠক হারুনুর রশিদ।
টুর্নামেন্টের নাম কী হবে তা এখন বিবেচনাধীন। কয়েকটি নাম নিয়েই ভাবছে মন্ত্রণালয়। অনুমোদন না হওয়ায় বলতেও চাননি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। হারুনুর রশিদ জাগো নিউজকে জানিয়েছেন,‘নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এখানে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একটা অনুমোদনের বিষয় আছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে টুর্নামেন্টটি করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই ভাবছে মন্ত্রণালয়।’
সভায় উপস্থিত বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ জাগো নিউজকে বলেছেন,‘মন্ত্রণালয় একটি খসড়া বাইলজ করেছে। আমাদের সে বাইলজ দিয়েছে একটু দেখে দিতে। পাশপাশি বাজেটে কি কি থাকতে পারে সেগুলোর বিষয়েও আমাদের মতামত চেয়েছে। আমরা এগুলো তৈরি করে পাঠিয়ে দেবো মন্ত্রণালয়ের কাছে।’