দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৪১ হাজার ৮০১ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৫ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৭৮৩ জনে। এর আগে ১৭ জুন এক দিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮ জন শনাক্তের রেকর্ড রয়েছে। সোমবার সেই রেকর্ড পার হয়ে গেল।
এর আগে রোববার জানানো হয়েছিল, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৮০৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮৭ জনে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৩ মারা গিয়েছিলেন। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১ হাজার ৭৩৮ জনে।
এ হিসেবে দেখা যাচ্ছে রোববারের তুলনায় সোমবার মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ২ জন। আর শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে ২০৫ জন।
সোমবার (২৯ জুন) দুপুরে করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৫৩ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ১৬ জুনের বুলেটিনে।
বুলেটিনে বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। ছুটি শেষে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
অন্যদিকে বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়েছে। এছাড়া মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচ লাখ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ক্রমেই বাড়ছে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব।
পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইটওয়ার্ল্ডো মিটারের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি দুই লাখ ৪৩ হাজার ৮৫৮ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৬৩ হাজার ৬৩৪ জন।
এছাড়া বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৪ হাজার ৪১০ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩১৮৪ জন। এছাড়া করোনা থেকে মোট সুস্থ হয়েছেন ৫৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪৯৫ জন।
করোনায় সবচেয়ে টালমাটাল দেশ যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৭৭ জন। দেশটিতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৩৭ জনের। করোনায় মোট মৃতের দিক থেকেও প্রথমে রয়েছে দেশটি। তবে দেশটিতে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৬ জন।
করোনায় আক্রান্তের থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ২৫৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৫৭ হাজার ৬৫৮ জনের। আর এ পর্যন্ত ব্রাজিলে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৮৪৮ জন।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অঙ্গরাজ্যে ভিক্টোরিয়ায় মহামারি করোনাভাইরাসের একটি নতুন সংক্রমণ শুরু হয়েছে। সিগারেটের লাইটার থেকে সেখানে করোনা ছড়াচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে একই লাইটার ব্যবহার বা বিনিময় থেকে নতুন এই সংক্রমণ শুরু হয়েছে।
মেলবোর্নের একটি হোটেলের স্টাফরা এই সিগারেটের লাইটার নিজেদের মধ্যে বিনিময় করেন। এরপর সেখানে নতুন করে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। রোববার ভিক্টোরিয়ায় নতুন করে ৪৯ জন রোগী পাওয়া গেছে, যা গত ২ মাসে সর্বোচ্চ। সিগারেটের লাইটার বিনিয়মকেই এর জন্য সন্দেহ করা হচ্ছে।
অঙ্গরাজ্যের প্রধান ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুজ বলেন, সংক্রমণ হয়েছে একটি হোটেল থেকে। যেখানে সামাজিক দূরত্ব ছিল ঠিক কিন্তু একটি লাইটার তারা সবাই ব্যবহার করেন।
তিনি আরও জানান, মেলবোর্নে বেশ কয়েকটি এলাকায় গুচ্ছভাবে করোনা সংক্রমণ হওয়ায় নতুন করে স্টে হোম এবং লকডাউন আরোপ করা নিয়ে বিবেচনা করছে স্থানীয় প্রশাসন। এদিকে অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৭ হাজারের কিছু বেশি। এর মধ্যে মারা গেছেন ১০৪ জন।