এক বছর ধরে ভালোবাসার সম্পর্কের পর পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে আমার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রিফাতুজ্জামান রিফাতের। কিন্তু বিয়ের পরদিনই রিফাতের ভালোবাসা শেষ হয়ে যায়। বিয়ের পরদিন রিফাত থানায় আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে জানিয়েছে, তাকে নাকি আমি জোর করে বিয়ে করেছি। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়ে সমাধান চেয়েছি।
এদিকে, সাতক্ষীরা থানা পুলিশের ওসি (আইসিটি) মহিদুল ইসলাম আমাকে বলেছেন, তুমি দুই লাখ টাকা নিয়ে ওকে ডিভোর্স দাও। আর সাতক্ষীরা সদরের এমপির ভাই মাহি আলমও একই কথা বলে আমাকে চাপ দিচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে ওসি মহিদুল ইসলাম জানান, তিনি এ ধরনের কোনো কথা ওই মেয়েকে বলেননি। তদন্তের জন্য রিপার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন সাতক্ষীরা সদরের লাবসা গ্রামের সাবিনা ইয়াসমীনের মেয়ে নাজমা সুলতানা রিপা। তার স্বামী রিফাত কালিগঞ্জ উপজেলার ঘুষুড়ি রাজাপুর গ্রামের আসাদ গাজির ছেলে। তিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা ফায়ার স্টেশনে চাকরি করেন।
রিপা বলেন, গত ৬ অক্টোবর রিফাতের সঙ্গে আমার বিয়ের একদিন পর থানায় অভিযোগ দেয় রিফাত। এদিকে, দুই লাখ টাকা নিয়ে পুলিশের মীমাংসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্বামী রিফাত ১৫ অক্টোবর রিপাকে পিটিয়ে ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনার পর গত কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে রিপা আরও বলেন, আমি আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করি রিফাতের বিরুদ্ধে। আদালত সাতক্ষীরা থানাকে একটি এফআইআর করার নির্দেশ দেন। থানায় রেকর্ডকৃত মামলা নম্বর ৭৪।
এরই মধ্যে স্বামী রিফাতের দেয়া মামলায় রিপার মামলার সাক্ষী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ও ম্যারেজ রেজিস্ট্রার মো. সাইদুজ্জামানসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। তার ম্যারেজ রেজিস্ট্রার সাইদুজ্জামানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, রিফাতের বিরুদ্ধে মামলা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। বরং রিফাতের দেয়া মামলায় রিপার পরিবার ও সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কেউ কেউ জামিনে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অফিসে ২৪ অক্টোবর তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। তাতেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান রিপা। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে রিপার মা সাবিনা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।