বরিশালে অধিক মূল এবং দোকান খোলা রেখে জনসমাগম করার অপরাধে ৪৭ হাজার পাঁচশত টাকা জরিমানা

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

বরিশাল জেলা প্রশাসনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও বরিশাল নগরীতে মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত আছে। আজ ২৫ এপ্রিল শনিবার সকাল থেকে বরিশাল মহানগরীতে ৪ টি মোবাইল কোর্ট টিম মাঠে অভিযান পরিচালনা করেন এসময় চৌমাথা মোড়, নথুল্লাবাদ, কাশিপুর বাজার, বাংলা বাজার, আমতলার মোড়, সাগরদী, রুপাতলী, পুলিশ লাইন, বাজার রোড, গীর্জা মহল্লা, চকবাজার, বাজার রোড, জেলা খানার মোড়, কাঠপট্টি এলাকায় জেলা প্রশাসন বরিশাল এর পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ বাজার মনিটরিং, জনসমাগম করে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বরিশাল জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ১৩ টি প্রতিষ্ঠান এবং একজন ব্যক্তি কে মোট ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা অাদায় করা হয়। নগরীর বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন।

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল মোঃ নাজমূল হুদা, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আফরোজ, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আতাউর রাব্বী। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি এ সময় বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা, মাক্স পরার নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে মাক্স বিতরণ করা হয়।

এসময় সবাইকে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে জরুরি ঔষধ ব্যতীত সকল প্রকার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। এসময় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনায় করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাজমূল হুদা। অভিযান পরিচালনাকালে বিজয় স্টোর এবং আলমগীর স্টোর (নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রয়কারী) প্রতিষ্ঠান কে মূল্য তালিকা না থাকা এবং অধিক দামে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রয়ের অপরাধে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। অমীত সাহা নামে এক ব্যক্তি প্রতি কেজি ৯০ টাকার মুড়ি ১৪০ টাকা বিক্রয় করায় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারা অনুযায়ী ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পলাশ নামে এক ব্যক্তি কে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে জনসমাগম করায় তাকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। অপর একটি মোবাইল কোর্ট টিম এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযানকালে বাংলাবাজার ও রূপাতলী বাজারে দ্রব্যমূল্যের তালিকা না থাকা ও অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৮ ও ৪০ ধারায় চারটি পৃথক মামলায় চারটি দোকানকে ভিন্ন ভিন্ন অংকে ১১ হাজার টাকা এবং সিএনবি রোডে বাড়ির নির্মাণ কাজে শ্রমিক সমাগমের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরীর অপরাধে দন্ডবিধির ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারা মোতাবেক বাড়ির মালিক মোঃ ফজলুল হক কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। মোবাইল কোর্ট অভিযানে আইনানুগ সহযোগিতা করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ এর একটি টিম।

অপর একটি মোবাইল কোর্ট টিমে অভিযান পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদান করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ অাতাউর রাব্বী। এ সময় নগরীর চকবাজার এলাকায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ১টি দোকানকে করোনার ঝুঁকি বৃদ্ধি করার দায়ে দন্ডবিধি ২৬৯ ধারা মোতাবেক ৫০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সহযোগিতা করেন মেজর জাহাঙ্গীর সহ র‌্যাব-৮ এর একটি টিম। অপরদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুমানা আফরোজ এর নেতৃত্বে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রচার প্রচারণাসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি ঘরে অবস্থা করার অনুরোধ করেন।

এসময় ক্রকারীজ সহ নানা অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে জনসমাগম করায় তিনটি প্রতিষ্ঠান কে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারা মোতাবেক ১১ হাজার টাকা এবং অভিযোগের ভিত্তিতে ধার্য্যকৃত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে পন্য বিক্রি করায় একটি প্রতিষ্ঠান কে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী ৫ হাজার টাকা অর্থ দন্ড প্রদান করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম। অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় বলেন, জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা এবং করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং এটিকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রোধকল্পে নিয়মিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।