গত ১৮ এপ্রিল শনিবার বরিশালে মাদক নিয়ন্ত্রন কার্যালয়ে অতিরিক্ত পরিচালক এ এ এম হাফিজুর রহমান অফিসে অবস্থান কালে তার অধিনস্ত কর্মচারীরা শতাধিক ক্রেতা জমায়েত করে দেশিও মদ বিক্রি করছিল। এসময় বাংলাভিশন টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাপার্সনকে নির্মমভাবে প্রহার করে ক্যামেরাভাংচুর করে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত অতিরিক্ত পরিচালকসহ ২৫ জন কর্মকর্তাকে একযোগে বদলী করা হয়েছে। আজ দুপুরে প্রথমে বদলী করা হয় বরিশাল মাদক নিয়ন্ত্রন অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক এ এ এম হাফিজুর রহমানকে। তার কিছুক্ষণ পরই মহাপরিচালকের পক্ষে উপ পরিচালক মোহাম্মদ মামুন স্বাক্ষরিত এক পত্রে বরিশাল জেলার ২৪ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে এক যোগে বদলী করা হয়। এদের মধ্যে ২জন পরিদর্শক, ৪জন উপ পরিদর্শক, ৪জন সহকারী পরিদর্শক, ১জন উপ সহকারী পরিদর্শক, ৬জন সিপাহী, ১জন হিসাবরক্ষক, ২জন গাড়ি চালক, ২জন অফিস সহকারী, ১জন অফিস সহায়ক ও ১জন ওয়ালেস অপারেটর রয়েছেন। বদলীকৃতদের আগামী ২৬ এপ্রিলের মধ্যে কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, বরিশাল মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যেই মদ বিক্রি করে আসছিল অতিরিক্ত পরিচালক হাফিজুর রহমানসহ তার কিছু ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সকাল থেকে অধিদফতরে গেটে জটলা দেখে কয়েকজনসহ বাংলা ভিশনের সাংবাদিক হাজির হন। ভিতরে ঢুকে দেখেন গ্যালন ভর্তি করে লিকুইড মদ বিক্রি হচ্ছে। জানা গেল ৯০ টাকার মদ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা লিটারে। ছবি তুলতে গেলেই অধিদফতরের মদ বিক্রিতে নিয়োজিত কর্মচারীরা ধাওয়া করে বাংলাভিশনের ক্যামেরা পার্সন কামালকে মারধর করে ভেঙ্গে ফেলা হয় তার ক্যামেরা। মাদক নিয়ন্ত্রন কার্যালয়ে শতাধিক মাদক ক্রেতাদের জনসমাগম ঘটিয়ে মাদক (মদ) বিক্রি ও সংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক বরিশাল এস, এম, অজিয়র রহমান এর নিদের্শে একজন ম্যাজিস্ট্রেটর নেতৃত্বে র্যাব পুলিশ সমন্বয়ে মোবাইল কোর্ট টিম ঘটনাস্থল পৌঁছে সেখান থেকে বিপুল পরিমান দেশিও মদ আটক করে। ছুটে আসে সাংবাদিকরা। আটক করা বিপুল পরিমান মদ মাটিতে ঢেলে নস্ট করা হয়। জানা গেছে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের অফিসের মধ্যেই কেরু কোম্পানীর গোডাউন। এখান থেকে ডিলারদের মদ সাপ্লাই দেয়া হয়। ভ্রাম্যমান আদালদ মদের গোডাউন সিলগালা করে দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তারের অতিরিক্ত পরিচালক হাফিজুর রহমানকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়ে আসা হয়। এদিকে বাংলাভিশনের বরিশালের প্রতিনিধি শাহীন হাসান ক্যামেরা পার্সনকে মারধোর ও ক্যামেরা ভাংচুরের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন প্রশাসনের কাছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আজ ২৫ জনের বদলীর আদেশ করা হয়। অভিযুক্ত অতিরিক্ত পরিচালক হাফিজুর রহমানকে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ে অতিরিক্ত পরিচালক পদে বদলী করা হয়েছে। আর বরিশালের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে পরিতোষ কুমার কুন্ডুকে।