আমতলী প্রতিনিধি ॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রামণ রোধে আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষনা করেন বরগুনা জেলা প্রশাসন। এ লকডাউনকে পুজি একে একটি মহল আমতলী উপজেলার আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে রেখে দিয়েছেন।
এতে অতি জরুরী কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলাচলা বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত সড়ক থেকে গাছের গুড়ি সরানোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। খবর পেয়ে রবিবার ইউএনও মনিরা পারভীন জরুরী কাজে নিয়োজতি যানবাহন চলাচলের জন্য পুলিশ ও দমকল বাহিনীর লোকজন দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়ক থেকে গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলেছেন।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম দেলওয়ার হোসেন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাইন বিল্লাহ আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষনা করেন। মানুষকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে উপজেলার সর্বত্র মাইকিং করা হয়েছে।
এ খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পরে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। এই সুযোগে একটি মহল আঞ্চলিক ও গ্রমাীণ সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে জরুরী কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করেছে।
সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে রাখায় সবজি পরিবহনের গাড়ী ও এ্যাম্বুলেন্স যেতে পারছে না। সবজির পরিবহন না আসতে পারায় আমতলী উপজেলা শহরের সবজির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এছাড়া উপজেলা শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে খাদ্য সহায়তা সামগ্রী নিয়ে যেতে সমস্যা এবং প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চল থেকে রোগী নিয়ে আসতে পারছে না। দ্রুত সড়ক থেকে গাছের গুড়ি সরানোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
খবর পেয়ে রবিবার ইউএনও মনিরা পারভীন জরুরী কাজে নিয়োজতি যানবাহন চলাচলের জন্য পুলিশ ও দমকল বাহিনীর লোকজন দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়ক থেকে গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলেন।
অপর দিকে শনিবার রাতে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম হাওলাদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক বার্তায় সড়কে গাছের গুড়ি সরিয়ে নেয়ার আহবান জানান। তার আহবানে সাড়া দিয়ে কিছু সড়ক থেকে গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
রবিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলা শহরের সাথে সংযুক্ত কাউনিয়া, নাচনাপাড়া , মানিকঝুড়ি, খুড়িয়ার খেয়াঘাট, ইসলামপুর, বাদ্রা, ফকিরবাড়ী, শাখারিয়া, মহিষকাটা, চুনাখালী, খেকুয়ানী, আড়পাঙ্গাশিয়া, খলিয়ান, বান্দ্রা, ঘোপখালী, গুলিশাখালী, কাঠালিয়া, অফিসবাজার, আজিমপুর, গাজীপুর সোনাখালীসহ উপজেলার অর্ধ শতাধিক সড়কে বিভিন্ন স্থানে গাছের গুড়ি ফেলে রেখেছে একটি মহল। ওই সড়কগুলি দিয়ে গ্রামাঞ্চলের সবজির গাড়ীসব জরুরী কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।
আমতলী চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছের গুড়ি ফেলে রেখেছে একটি মহল। এতে জরুরী কাজে নিয়োজিত যানবাহন যেতে পারছে না।
একই গ্রামের শাহজাহান, ইউনুচ সরদার ও জামাল সিকদার বলেন, সড়কে গাছ ফেলে রাখায় রাতে সবজি নিয়ে পটুয়াখালী যেতে পারিনি। এতে আমাদের অন্তত ৪০ হাজার টাকার সবজি নষ্ট হয়েছে।
পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, অতি উৎসাহী কিছু লোক সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ ফেলে রেখেছে। এতে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। দ্রুত গতিতে সড়ক থেকে গাছ তুলে নেয়ার দাবী জানাই।
গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের শাহ আলম বলেন, লকডাউনের মধ্যে পাকা সড়কে গাছ ফেলে রাখা অন্যায়। রাতের আধারে কিছু লোক সড়কে গাছ ফেলে রেখেছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে রেখে জরুরী কাজে নিয়োজিত যানবাহনে বিঘœ সৃষ্টি করা যাবে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গ্রাম পুলিশ ও সচেতন নাগরিকের মাধ্যমে ওই গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলতে হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, বিভিন্ন সড়ক থেকে গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অবশিষ্ট গাছের গুড়ি সড়ক থেকে সরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যারা সড়কে গাছের গুড়ি রেখেছে তাদেরই সড়ক থেকে গাছের গুড়ি সরিয়ে ফেলতে হবে। নইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।