বাংলাদেশে প্রথম তিনজন নোভেল করোনা ভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আরো তিনজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
রোববার (৮ মার্চ) দুপুরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গতকাল (শবিনার) তাদের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে।
রোগতত্ত্ব বিভাগ বলছে, ইতালি থেকে করোনার সংক্রমণ নিয়ে দেশে ফেরেন দুই বাংলাদেশি। যাদের মধ্যে একজনের পরিবারের সদস্যসহ মোট তিনজনে কোভিড নাইনটিন শনাক্ত নিশ্চিত হয়।
আইইডিসিআর পরিচালক আরও জানান, সংক্রমণের শঙ্কায় কোয়ারেন্টিনে আছে আরও ৩ জন।
মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার মতো কোনো পরিস্থিতি হয়নি। স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি।’
তবে করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজন না হলে জনসমাগমে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন সেব্রিনা।
তিনি বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আছে। আইসোলেশেন ইউনিট করা হয়েছে।’
সেব্রিনা বলেন, ‘আশঙ্কা করছি না আরও ছড়িয়ে পড়বে। প্রত্যেকের মাস্ক পরে ঘুরে বেড়ানোর কোনো দরকার নেই।’
আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী এবং দুজন পুরুষ রয়েছে। তাদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে বলেও জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআর জানিয়েছে, আক্রান্ত তিনজন রোগীর অবস্থায়ই স্থিতিশীল। তারা ভালো আছেন। তবে আইসোলেশনে থাকবেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম ধরা পড়ে করোনা আক্রান্ত রোগী। পরে চীনের অন্যান্য প্রদেশ এবং বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে ভারত ও পাকিস্তানেও করোনায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশে রোগী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা এই প্রথম।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ১৯৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী ১০৩টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০০ জনে।
শুধু চীনের মূল ভূখণ্ডেই ৮০ হাজার ৬৯৬ জন আক্রান্ত এবং ৩ হাজার ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। চীনের বাইরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে অন্তত ৭ হাজার ১৩৪ আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৫০ জন।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৮৮৩ এবং মৃত্যু হয়েছে ২৩৩ জনের। অপরদিকে, ইরানে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৮২৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৪৫ জন।