বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকার আবাসিক হোটেল সাঁততারায় ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও চাঁদাবাজির ঘটনায় একজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
আটক বশির উদ্দিন হাওলাদার (৪৪) বরিশাল নগরের কাউনিয়া হাজেরা খাতুন বিদ্যলয় সংলগ্ন সড়কের ভাড়াটিয়া ও এলজিআরডি’র বরিশাল সদরের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী (এমএলএসএস) বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ।
থানায় দেয়া অভিযোগের বরাত দিয়ে হোটেল সাঁততারা’র মালিকের ছোটভাই সানাউল্লাহ চৌধুরী জানান, গত বৃহষ্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আটক বশির হাওলাদার নিজেকে ডিবি পুলিশের সদস্য হুমায়ুন কবির নামে পরিচয় দিয়ে হোটেলে প্রবেশ করে। এসময় তিনি হোটেলের বেশ কয়েকটি কক্ষ তল্লাশি করেন এবং হোটেল অনৈতিক কাজ করা হয় বলে অভিযোগ তোলেন।
এরপর হোটেলে মালিকের ছোটভাই সানাউল্লাহ চৌধুরী ও হোটেল ম্যানেজার ইউসুফকে মারধর এবং নানানভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুইদফায় বত্রিশ হাজার ৫ শত টাকা নেয়।
পরে ২০৪ নাম্বার কক্ষে থাকা বাচ্চাসহ এক নারীর সাথে অপ্রিতীকর ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ তুলে একটি সাঁদা কাগজে মুচলেকা নেন। যেখানে আরো ১ লাখ টাকা ডিবি পুলিশের পরিচয়দানকারী ব্যক্তিকে দেয়ার কথা লেখা ছিলো।
সানাউল্লাহ চৌধুরী জানান, এসময় ওই ব্যক্তি আমাকে ৫০ হাজার ও হোটেল ম্যানেজারের কাছ থেকে তার বাবার নাম্বার নিয়ে কল দিয়ে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার জন্য বলেন। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তি ২০৪ নাম্বার কক্ষে থাকা বাচ্চাসহ ওই নারীকে এবং ওই নারীর স্বামী পরিচয়দানকারী মাইক্রেবাসের চালক আফসারকে নিয়ে চলে যান।
বিষয়টি হোটেল মালিক সোলায়মান চৌধুরীকে জানানো হলে তিনি বিষয়টি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার(উত্তর) মোঃ খায়রুল আলম জানান, তিনি বিষয়টি জানার পরপরই হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষন করে এর সত্যতা পান।
পরবর্তীতে এয়ারপোর্ট থানাকে মামলা নিতে বলেন এবং ঘটনার তদন্তসহ জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেই।
এরপর বিষয়টি নিয়ে এডিসি (উত্তর) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে উত্তর জোনের আওতায় এয়ারপোর্ট ও কাউনিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা অভিযানে নামেন।
অভিযানের আগে হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে অভিযুক্তর ছবি ও নানান মাধ্যমে তার অবস্থান সনাক্ত করে রোববার (০১ মার্চ) ভোরে কাউনিয়া এলাকা থেকে বশির উদ্দিন হাওলাদারকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে এবং তার পরিচয় হিসেবে এলজিআরডি’র বরিশাল সদর অফিসে এমএলএসএস পদে কর্মরত রয়েছে বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতারকৃতর কাছ থেকে ডিবি লেখা একটি জ্যাকেট ও হোটেল মালিকের ভাইয়ের কাছ থেকে নেয়া সাদা কাগজের মুচলেকাটি উদ্ধার করা হয়েছে।