দেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে মোবাইল ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর পরিবর্তন করার সুবিধা। মঙ্গলবার বিটিআরসির সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার যৌথ কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেককে এ সেবা প্রদানের নোটিফিকেশন পত্র প্রদান করা হয়।
এসময় বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, কমিশনের বিভিন্ন বিভাগের কমিশনার, মহাপরিচালক এবং লাইসেন্সের জন্য নোটিফিকেশন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইনফোজিলিয়ান ছাড়াও মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) নামের এই সেবা প্রদানের জন্য আরও চারটি কনসোর্টিয়াম সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ ও লিথুনিয়ার যৌথ কোম্পানি গ্রিন টেক মিডিয়াফোন লি., ব্রাজিল বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম, বাংলাদেশ ও পোল্যান্ডের যৌথ কোম্পানি রিভ নম্বর লি. এবং বাংলাদেশ ও মিসরের যৌথ কোম্পানি রয়েল গ্রিন লি.। এমএনপি লাইসেন্স প্রদান সংক্রান্ত টেন্ডার কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইনফোজিলিয়ান সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে এ সেবা প্রদানের যোগ্যতা অর্জন করে।
বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৫ অক্টোবর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে বিটিআরসি কর্তৃক লাইসেন্স প্রদানের পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে কমিশনের ২০৮তম সভায় সরকার পূর্বানুমোদন জ্ঞাপন করায় এমএনপি গাইডলাইনের সকল শর্ত পালন সাপেক্ষে ওই প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর গত ০১ নভেম্বর ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেককে লাইসেন্স প্রাপ্তি সংক্রান্ত একটি নোটফিকিশেন পত্র ইস্যু করা হয়। লাইসেন্স প্রাপ্তির পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের মোবাইল গ্রাহকের কমপক্ষে ১ শতাংশ, ১ বছরের মধ্যে ৫ শতাংশ এবং ৫ বছরের মধ্যে ১০ শতাংশ-কে এ সেবার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। একজন সেবা গ্রহীতা ৩০ টাকার বিনিময়ে প্রতিবারের জন্য অপারেটর বদল করতে পারবেন।
লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য নোটিফিকেশন প্রাপ্ত ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেককে এমএনপি গাইডলাইনের শর্তানুযায়ী লাইসেন্স অ্যাকুইজিশন ফি ১০ কোটি টাকা, বাৎসরিক লাইসেন্স ফি ২৫ লক্ষ টাকা, রেভেনিউ শেয়ারিং (২য় বছর থেকে) ১৫ শতাংশ হারে, ব্যাংক গ্যারান্টি ১০ কোটি টাকা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে ২য় বছর থেকে বাৎসরিক নিরীক্ষাকৃত আয়ের ১ শতাংশ বিটিআরসিকে প্রদান করতে হবে ।
এমএনপি চালুর ফলে এক অপারেটরের নম্বরে অন্য অপারেটরের সংযোগ নেয়া যাবে। গ্রাহক যে অপারেটরের সেবা পছন্দ করবে, বিনা দ্বিধায় সেই অপারেটরের সংযোগ নিতে পারবেন। এ জন্য নিজের ফোন নম্বরটিও পাল্টাতে হবে না। এ সেবা প্রবর্তনের ফলে মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে গুণগত সেবা প্রদানের প্রতিযোগিতা এবং মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্বের ৭২টি দেশে এ সুবিধা চালু রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ২০১১ সালে এবং পাকিস্তানে এ সেবা ২০০৭ সাল থেকে চালু রয়েছে।