ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা এবং পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার কলেজের মূল ভবনের সামনে সংঘর্ষের পর বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সশস্ত্র মহোড়া ও মারামারি হয়। এ নিয়ে সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে পুনরায় হামলা ও পাল্টা হামলা এবং রাতে বহিরাগত দুই গ্রুপ লাঠিসোটা এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে পাল্টা পাল্টি বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন।
এ নিয়ে রাতভর ক্যাম্পাস জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে কলেজ প্রশাসন এবং কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে উভয় পক্ষকে বিচারের বিষয়ে আশ্বস্থ করলে অবরোধ তুলে নেয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, ‘ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগ কর্মী ফাহিমের সাথে জাফরের দ্বন্দ্ব হয়। এরা দু’জন বিএম কলেজ ছাত্র নেতা ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম ও মহানগর ছাত্রলীগ নেতা রইজ আহমেদ মান্নার অনুসারী বলে জানাগেছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুই গ্রুপের মারামারি ঘটনা মীমাংসা করে দেয় কলেজ প্রশাসন। কিন্তু এর পরেও ওই দিন দুপুরে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের নিয়ে মহোড়া দেয় জাফর। এসময় সে আলিফ হোসেন হীরা নামে বহিরাগত এক ছাত্রলীগ কর্মীকে গালাগাল করে।
তখন বহিরাগত হীরা মারধর করে জাফরকে। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে পুনরায় মারামারি হয়। এ ঘটনার জের ধরে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উভয় গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ক্যাম্পাসের বাস্কেটগ্রাউন্ডে পুনরায় মারামারিতে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে এ ঘটনার কিছু সময় পরেই লাঠিসোটা নিয়ে পুনরায় ক্যাম্পাসে মহোড়া দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও কলেজ সংলগ্ন প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে ঘন্টাব্যাপী অবরোধ সৃষ্টি করে ছাত্রলীগ কর্মী জাফর ও তার অনুসারীরা।
পরে কলেজ অধ্যক্ষ ও কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পাশাপাশি তাদের আশ^াসে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। তারা এই ঘটনায় বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশের সুযোগ নেই। সুতরাং আমরা বিষয়টি কঠোরভাবে দেখছি। এই বিষয়ে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, ‘মঙ্গলবার দুই গ্রুপের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছিল। যা মীমাংসাও করা হয়। কিন্তু এক পক্ষ পরবর্তীতে একই বিষয় নিয়ে ফের ঝামেলার সৃষ্টি করে। এ নিয়েই দুই গ্রুপ পুনরায় অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়ায়।
তবে কলেজ এবং পুলিশ প্রশাসনের সতর্ক অবস্থানের কারনে বড় ধরণের কোন অপ্রীতিকর বা রক্তক্ষয়ি ঘটনা ঘটেনি। তবে বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে দেখছি। তদন্ত করে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।